সাভার (ঢাকা): বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে পুরোপুরি প্রস্তুত বীর শহীদদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর স্থান সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এবার ১৬ ডিসেম্বরে একটু আলাদা রূপ দেওয়া হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের।
গতবছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও বিজয়ের ৪৯তম ১৬ ডিসেম্বরে বৈশ্বিক মহামারি করোনা থাকায় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসতে পারেননি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তবে এ বছর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ ভারতের রাষ্ট্রপতিও স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন বলে জানা গেছে।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সে কারণে এক মাস ধরেই পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতাসহ লাল-সবুজের চিত্র ধরে সৌধ চত্বরকে সাজানো হয়েছে। শুধু তাই নয় তার নিরাপত্তায় নজরদারি জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের নবীনগরে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণের গিয়ে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
এছাড়া গত দুইদিন স্মৃতিসৌধ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক ও দ্বিতীয় ফটকের সামনে সড়কের ডিভাইডারের রং করা হচ্ছে। ফটকগুলোর ভেতরে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্মৃতিসৌধের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ছে বিভিন্ন রংয়ের আলোকসজ্জার বাতি, গাছের নতুন টপ। আর পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে এই প্রাঙ্গণের পুরো জায়গা। এছাড়া চারদিকে রয়েছে কয়েকশত সিসিটিভি ক্যামেরা।
ধোয়া মোছার কাজ শেষ করে রং দেওয়ার কাজ করছেন আলামিনসহ আরও কয়েকজন। তারা বাংলানিউজকে বলেন, পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার-পরিছন্ন করা হয়েছে। এখন রং দেওয়ার কাজও প্রায় শেষ। সেই সঙ্গে আলোকসজ্জা লাগানোর কাজও। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ আমরা ধোয়া-মোছার রং দেওয়াসহ ফুল গাছ লাগানোর কাজ করে থাকি। শেষ মুহূর্তের টুকিটাকি কাজ চলছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তার বিষয়ে পরিদর্শনে আসেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নিরাপত্তার জন্য এবার স্মৃতিসৌধ এলাকার অর্ধশত পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের সাদা পোশাকেসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা রয়েছেন। ১ ডিসেম্বর থেকে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায় সিকিউরিটি ডেপ্লয় করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিজয় উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রায় বিগত দুই মাস ধরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। ফুল দিয়ে সাজানো, লেক সংস্কার, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব কাজ পুরোপুরি শেষ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত আছে। তবে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে আসবেন। আমরা আশা করছি ওই দিনই দুপুরে শহীদদের সম্মানে উনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। যেহেতু ১৬ ডিসেম্বর প্রস্তুতির সঙ্গে এজন্য দুইদিন আগেই আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এ কারণে গত ১ ডিসেম্বর থেকেই পুরো সৌধ এলাকায় সিকিউরিটি ডেপ্লয় হয়েছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিজয় উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
এনটি