ঢাকা: বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে পাক-হানাদাররা বাঙালির বিজয়কে অপূর্ণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু শহিদ বুদ্ধিজীবীদের দেখানো পথেই বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বাংলা একাডেমির বক্তৃতা অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেন বক্তারা।
একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে একক বক্তৃতা রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে একক বক্তৃতা রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পাটাতন নির্মাণে শহিদ বুদ্ধিজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ইতিবাচক বিনির্মাণে তাদের আসন্ন অবদানকে নস্যাৎ করতেই পাক-হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসররা একাত্তরের মার্চ থেকে বিজয়ের উষালগ্ন পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বুদ্ধিজীবীদের হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। বুদ্ধিজীবীদের হারানোর ক্ষত এখনও লেগে আছে বাংলার রক্তভেজা প্রান্তরে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শে বাংলাদেশ গঠনেই হতে পারে তাদের প্রতি জাতির শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা নিবেদন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরে দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসী সর্বক্ষেত্রে বিজয়ী বাংলাদেশের উপস্থিতি লক্ষ্য করছে। আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি, শিক্ষা, মানবসম্পদ, নারীর ক্ষমতায়নসহ সব সূচকে সুবর্ণজয়ন্তীর বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে আজ এক সুবর্ণ- শিরোনাম।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, বাংলাদেশের আপামর মানুষ কোনো জাগতিক বা বস্তুগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বরং একটি শোষণহীন, সাম্যবাদী, মানবিক সমাজ গঠনের জন্য তারা মরণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমরা যদি অগণিত মানুষের এই মূল্যবান আত্মত্যাগের মর্ম অনুধাবন না করি তবে আমাদের সব স্মরণ ও উৎসব আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম লোকমান। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লায়লা আফরোজ। মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ এবং কাদেরী কিবরিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সাহেদ মন্তাজ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
এইচএমএস/এনএসআর