ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিরাজদিখানে ১০ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা চেয়ারম্যানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
সিরাজদিখানে ১০ ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা চেয়ারম্যানের

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার জৈনসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ ভূমিহীন পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরাসহ স্থানীয় গ্রামবাসী।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের ভাটিভোগ গ্রামের ঈদগার মাঠের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু ও তার ভাই লুৎফর রহমানের যোগসাজশে ইউনিয়নটির ভাটিমভোগ গ্রামের বসতবাড়িসহ আর. এস. এর ৪টি দাগে মোট ১২৩.৩৮ শতাংশ জমি ভুয়া সনদ দিয়ে আত্মীয় স্বজনের নামে নামজারি করে দখলের চেষ্টা করছে। ফলে ওই জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসা ভূমিহীন ১০টি পরিবারে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিভিন্ন হুমকি ও চাপের মুখে পড়ে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে এসব ভূমিহীন পরিবারের সদস্যরা।

তারা বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও এসিল্যান্ডের বরাবর মিস কেইস করা হলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ তাদের। ফলে ভূমিহীন এসব পরিবারের একমাত্র আয়ের পথ কৃষি জমি ও বসতভিটা রক্ষায় দ্রুত সরকারসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভাটিমভোগ মৌজাস্থ আর. এস. ৩৫৮ খতিয়ানের ৪২৮, ৪৪২, ৪৪৩ ও ৫২৬ দাগের মোট ১২৩.৩৮ শতাংশ জমিতে ভূমিহীন ১০টি পরিবার ও পৈত্রিকসূত্রে মালিকানাধীন পরিবারসহ ওই সম্পত্তিতে বাধাহীনভাবে বসবাস ও ভোগদখল করে আসছি। সম্প্রতি আমরা জানতে পারি জনৈক দুই ব্যক্তির নামে সম্পত্তিগুলো নামজারি হয়েছে। তারপর ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জৈনসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুর ইসলাম দুদুর স্বাক্ষরিত দু'টি ভুয়া ওয়ারিশ সনদের মাধ্যমে উক্ত সম্পত্তিগুলো কথিত জীবন লাল সাহা ও সুনীল ঘোষের নামে নামজারি হয়েছে। কিন্তু জীবন লাল সাহা ও সুনীল ঘোষ নামে ব্যক্তি ভাটিমভোগ গ্রামে অতীতে ছিল না ও বর্তমানেও নেই। নাম জারির নথিতে দেখা যায় জীবন লাল সাহার (বাবা হিরেন্দ্র লাল সাহা) প্রদত্ত মোবাইল নম্বরটি (০১৭১১৫২৪১৩৩) বর্তমান চেয়ারম্যানের ছোট ভাই লুৎফর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর।  

নথিতে আরো দেখা যায়, উক্ত সম্পত্তিগুলো চেয়ারম্যানের মামা লিটন খান ও বেয়াই বাবরের নামে পাওয়ার নামা দেয়া আছে। এ বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে যোগাযোগ করা হলে। তিনি বিগত ২ বছর ধরে দেই দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপণ করে আসছেন। সম্প্রতি চেয়ারম্যান দুইটি ওয়ারিশ সনদ বৈধ দাবি করে এবং সম্পত্তিগুলো নাম জারি সঠিক হয়েছে জানিয়ে বিক্রির উদ্যোগ নেয়। সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন উক্ত সম্পত্তিগুলো চেয়ারম্যান চক্রের প্রভাবমুক্ত করে আমাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত জৈনসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আর প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। আমি এই জমি দখলের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না। আমি যে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়েছি সেটি ভালো করে তদন্ত করেই দিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা,ডিসেম্বর ১৫,২০২১
জিসিজি/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।