ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক তার ভিত্তি হচ্ছে রক্ত। আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে তারাও রক্ত দিয়েছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. ফজলে আলীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. নীম চন্দ্র ভৌমিক। এ সময় সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবু বাসুদেব ধর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন, ডা. আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ভৌগলিক, রাজনৈতিক নানা কারণে; সেটাকে আমরা সম্মান দেখাই। সৌদি আরবের সঙ্গেও ইসলামিক দেশ হিসেবে সুসম্পর্ক রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেছেন পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক রাখব। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ও ভারতের জনগণ যে অবদান রেখেছে এটা আমরা সব সময় মূল্যায়ন করি এবং সর্বোচ্চ স্থান দেই। এই সম্পর্কের ভিত্তি রক্তের।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকেই বাংলাদেশকে আবার পিছনের দিকে, ১৯৪৭ সালের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় এসে ইতিহাস বিকৃত করে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার জন্য সুপরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল। দুটি সামরিক সরকার দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থেকে ইতিহাসকে বিকৃত করে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন ছিল. যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল সেগুলো আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তবে আজকে আমরা আনন্দিত, কারণ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। আগে দেশের মোট বাজেটের ১৫ ভাগ আসতো বিদেশি সাহায্য থেকে, এখন এটি ২ ভাগে নেমে এসেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছি ৯ হাজার কোটি টাকা। সারা বিশ্বে সারের দাম বেড়েছে, অথচ আমরা বাড়াইনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমি কোনো সারের দাম বাড়াব না। ফলে এ বছর আমাদের ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে। পৃথিবীর কোনো দেশে পণ্য উৎপাদনে কৃষকদের এতো সহযোগিতা দেওয়া হয় না। আজকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, ভৌতকাঠামোর প্রতিটি ক্ষেত্রে অভুতপূর্ব সাফল্য এসেছে। ফলে অর্থনীতিবিদসহ অনেক রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশে আসেন আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ভিক্ষুকের জাতি না, বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। আমরা কোনো আলাদিনের চেরাগ পাইনি, পেয়েছি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, রাস্তাঘাট সব কিছু থাকবে, শুধু একজন এসে শিল্প গড়বে। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বেকার, তাদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। যদি শিল্পায়ন না করতে পারি, তাহলে চাকরি হবে না। কাজেই এ সরকারের লক্ষ্য হলো শিল্পায়নের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যাতে মাথা পিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান বাড়ে। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে দেশকে সম্পৃক্ত করেছি এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এ অঞ্চলে সম্প্রীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার।
বঙ্গবন্ধু জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে গেছেন দেশের মানুষের কল্যাণে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আলো জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যত দিন তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন, তার দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও দেশপ্রেম দিয়ে বাবার আদর্শ দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন। বাংলাদেশকে পৃথিবীতে একটি আদর্শ উন্নত, স্থিতিশীল শান্তির দেশে উন্নীত করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮,২০২১
জিসিজি/এমএমজেড