ব্রাহ্মণবাড়িয়া: রাত তখন নয়টা। কুয়াশা ও অন্ধকার।
সড়কটা ছিল অনেটাই নির্জন। ঠিক সেই মুহূর্ত গোলাগুলির শব্দ। দৌড়ে গিয়ে দেখেন তার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কের পাশে পড়ে আছেন। তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকা অপরজন ঘটনাস্থলে মারা যান। চার থেকে পাঁচটা মোটরসাইকেল। লোক ১৫/১৬ জন। তাদের হাতে ছিল অস্ত্র। তারা মহূর্তের মধ্যেই কিলিং মিশন শেষ করে মোটরসাইকেল যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে রওনা দেয়।
ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে আঞ্চলিক সড়কের পাশেই একটি ঘরে বাস স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন। ঘরের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বসে কথা বলছিলেন। তিনি প্রথমে মনে করেছিলেন পাশের বাড়িতে বিয়ে চলছিল মনে হয় বিয়ে বাড়ির ছেলেরা পটকা ফুটাচ্ছেন। কিন্তু গুলির শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন।
তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাবার সময় দেখি মোটরসাইকল থেকে কথা বলতাছে কাম সাইরা লাইছি। তাড়াতাড়ি চল। তখন কাছে গিয়ে দেখি এরশাদ ভাই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। তার সাথের জন ঘটনাস্থলে মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠালে পথেই তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই আক্তারুজ্জামান বলেন, আমি বিদেশে থাকি। ভাইয়ের নির্বাচনের জন্য আমি ছুটি নিয়ে দেশে এসেছি। গতকাল রাতে আমার ভাইয়ের সঙ্গে গ্রামের একটি ওয়াজ মাহফিলে যায়। পরে সেখান থেকে দুই মোটরসাইকলে করে একসঙ্গে রওনা দেই। আমার ভাইয়ের গাড়ি ছিল সামনে। পথের মধ্যে এক লোক আমাকে ডাক দিলে এক মিটিটের জন্য দাঁড়াই। পরে দেখি গুলির শব্দ। তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি ৪/৫টা মোটরসাইকেলে ১৫/১৬ লোক। তারা আমার ভাইসহ আরেকজনকে গুলি করে মুহূর্তের মধ্যেই চলে যায়।
নিহতের এরশাদুলের স্ত্রী ইসরাত জাহান সুমি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আমার ছোট ছোট দুই ছেলে ও এক মেয়েকে এতিম করে চিরজীবনের জন্য চলে গেছেন। আমি এই শোক কি করে সইবো। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
কেএআর