কক্সবাজার: রোহিঙ্গা নেতাকে অপহরণের পর হত্যা,এরপর লাশ গুম করার জন্য পুতে ফেলার প্রায় এক বছর পর মাটির নীচ থেকে সেই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উখিয়ার ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের প্রাক্তন মাঝি ইয়াকুব এর পরিত্যক্ত ঘরের মাটির নিচে থেকে সেই মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মরদেহটি চাকমারকুল ক্যাম্প-২১ এর সি/৪ ব্লক (সাবেক এম ব্লক) এর মৃত মুছা আলীর ছেলে সাবমাঝি সৈয়দ আমীন (৪০) এর বলে শনাক্ত করেছে তার স্ত্রী।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা তিন দুস্কৃতিকারীকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক ই/৩ মো. সালামের ছেলে মোঃ ইসলাম (২২), একই ক্যাম্পের মো. কাশেমের ছেলে আব্দুল মোন্নাফ (২৬) ও মো. সালামের ছেলে মোঃ ইলিয়াস (২৮)।
রোহিঙ্গা শিবিরে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যালিয়ানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.রবিউল ইসলাম পিপিএম জানান, শনিবার ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান এর নির্দেশনায় তার নেতৃত্বে শফিউল্লাহকাটা পুলিশ ক্যাম্প-১৬ এর ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান ভূঁইয়াসহ অন্যান্য অফিসার ফোর্স ক্যাম্প-১৪ হাকিমপাড়া ই/৩ ব্লকে মাঝি ও ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে ব্লক রেইড পরিচালনা করে ৩ জন এফডিএমএন দুষ্কৃতিকারীকে আটক করা হয়।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি চাকমারকুল ২১ নম্বর ক্যাম্পের সি/৪ ব্লক (সাবেক এম ব্লক) মৃত মুছা আলীর ছেলে সাবমাঝি সৈয়দ আমীনকে (৪০) অপহরণ করে ক্যাম্প-১৪ তে নিয়ে আনা হয়। অপহরণের পর ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে দুধর্ষ দুষ্কৃতিকারী শুক্কুর এর নেতৃত্বে ২০/২৫ জন দুষ্কৃতিকারী মিলে তাকে হত্যা করে ক্যাম্প-১৪ এর প্রাক্তন মাঝি ইয়াকুব এর পরিত্যক্ত ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ক্যাম্প-১৪ এর সিআইসিসহ থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ইয়াকুব মাঝির ঘরের মাটির নীচ থেকে সেই লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে অপহৃত মৃত সৈয়দ আমীনের স্ত্রী হাসান বশর লাশের পরনে থাকা কাপড়, বেল্ট ও মাথার চুল দেখে মরদেহটি “তার স্বামীর লাশ বলে” শনাক্ত করেন।
আটক দুস্কৃতিকারীরা আরও জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর আগে সাহাব উদ্দিন, আনোয়ার (আরসা‘র হেড জিম্মাদার), আনোয়ার ফারুক ও সাদেক ভিকটিম সৈয়দ আমিনকে মুখ বেঁধে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায় এরপর তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে।
প্রায় এক বছর পর হলেও অপহৃত সৈয়দ আমীনের লাশ উত্তোলন হওয়ায় সাধারন রোহিঙ্গাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে জানিয়ে মো.রবিউল ইসলাম পিপিএম আরও জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনের এটিই ঘটনা।
তিনি বলেন, ৮ এপিবিএন তৎপরতায় স্থানীয় রোহিঙ্গা ও ভলান্টিয়ারদের সমন্বয়ে রাতে পাহারা জোরদার করায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা একের পর এক গ্রেফতার হওয়ায় ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
এসবি/এমএমএস