ঢাকা: রাজধানীর বনানীতে নারী পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা বিজিবির সাবেক সদস্য মনোরঞ্জন হাজংয়ের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার (১৯ ডিসেবম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে এবং মামলার বাদি অভিযোগে আসামির নাম উল্লেখ করার পরও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মামলা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ঘটনাটি আমিও জানি। নাম না দেওয়ার কারণ, ঘটনা কী, সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কার দোষ, সেটি খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সার্জেন্ট মহুয়া আমাদেরই একজন সদস্য। তবে যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই সাধারণ মানুষ যেভাবে বিচার পান, তার বিষয়টি সেভাবে দেখা হবে। তার মামলার বিষয়ে গুলশান বিভাগ কাজ করেছে।
এদিকে মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজংকেই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তাকে ধাক্কা দেওয়া গাড়িচালক বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান।
ঘটনার পর দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রায় দুই সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বনানী থানায় মামলা দায়ের করতে সক্ষম হন সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। অথচ এই মামলা দায়েরের দুই দিন আগেই ১৪ ডিসেম্বর বনানী থানায় জিডিটি লিপিবদ্ধ করেন সাঈদ হাসান।
মনোরঞ্জনের ওপর দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে সাঈদ হাসান জিডিতে উল্লেখ করেন, এ ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নয়, বরং মনোরঞ্জন উল্টো দিক থেকে তার গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি ইউলুপে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় মারাত্মক আহত হন মনোরঞ্জন হাজং। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন বিচারপতি রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসান। তার স্ত্রী অন্তরা সাইফ আর বন্ধু রোয়াদও গাড়িতে ছিলেন। এরপর থেকে মামলার অভিযোগ নিয়ে ঘুরেছেন তার মেয়ে পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজং।
অবশেষে ব্যপক সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহুয়া হাজংয়ের মামলাটি নেয় বনানী থানা পুলিশ। তবে মামলায় আসামি হিসেবে অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়।
জানা যায়, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গাড়িটি জব্দ করে এবং বিচারপতির ছেলেকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু কিছু সময় পরই ছাড়া পেয়ে যান বিচারপতির ছেলে।
দুর্ঘটনার পর মনোরঞ্জনের ডান পায়ে কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের পর ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
পিএম/এমএমজেড