ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাবাসনের জন্য একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরতে পারেনি। মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা তৈরির মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হবে।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘের মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টম অ্যান্ড্রুজকে তার গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান। তার পদের সাফল্য আশা করেন। এসময় বাংলাদেশের অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অস্থায়ী আশ্রয় দেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ মানবিকতা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য উভয় দেশ ২০১৭ সালে প্রস্থানের পরপরই তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যেখানে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সম্মত হয়েছে। তবে দুঃখজনক হলো ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাবাসনের জন্য একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও একজনও রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরতে পারেনি।
তিনি বলেন, রাখাইনে আসিয়ান ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আস্থা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিকে রোহিঙ্গা এবং স্বাগতিক সম্প্রদায় উভয়ের জন্যই অস্থিতিশীল করে তুলছে। প্রত্যাবাসনে অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত করা রোহিঙ্গাদের আরও হতাশাগ্রস্ত করে তুলেছে এবং মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, খুন ইত্যাদির মতো বেআইনি কার্যকলাপের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে বাংলাদেশে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে মিয়ানমারের ভাষায় অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। তিনি হতাশা প্রকাশ করেন, কিছু অননুমোদিত বেসরকারিভাবে পরিচালিত লার্নিং সেন্টার, মাদ্রাসা এমনকি রোহিঙ্গাদের দ্বারা পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলো উগ্রবাদ প্রচার করছে। তাই সরকার ওইসব অননুমোদিত কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেছে।
ভাসানচরের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ নিজস্ব সম্পদ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল হিসেবে দ্বীপটিকে গড়ে তুলেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের সংস্থাগুলো দ্রুততার সঙ্গে সেখানে সম্পৃক্ত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
টিআর/এমএইচএম