পিরোজপুর: পিরোজপুরের সদর উপজেলার বাদুরা মৎস্য অবতারণ কেন্দ্রের পাইকারি মাছের বাজারে জাটকা উদ্ধারে গিয়ে ফাঁকা গুলি করেছেন কোস্টগার্ড। এ ঘটনার পর সেখানে আসা মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বাদুরা মৎস্য অবতারণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী মো. ইকবাল হোসেন উকিল বাংলানিউজকে জানান, বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে কয়েকটি ট্রলার বন্দরে আসে। এরপর রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে তারা মাছ বিক্রি শুরু করেন। হঠাৎ করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে কোস্টগার্ডের দলটি দল সিভিল পোশাকে আড়তে প্রবেশ করে। পরবর্তীকালে সেখানে ৬-৭ জন ব্যবসায়ীর ৬৮ মণ (প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার) ইলিশ মাছ ঝুঁড়িতে করে ট্রলারে তুলে নেয়। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় স্থানীয়রা কোস্টগার্ড সদস্যদের বাধা দিলে তারা এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে বিক্রির জন্য রাখা মাছগুলোর মধ্যে সামান্য কিছু ইলিশ মাছ ছোট ছিল বলে দাবি তার। বড় মাছগুলো রেখে যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করার পরও কোস্টগার্ড সদস্যরা এতে কোনো কর্ণপাত করেননি।
অভিযানের সময় কোস্টগার্ডের সঙ্গে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা মৎস্য বিভাগের কেউ উপস্থিত ছিলেন না বলেও দাবি ইকবালের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইকবালের পাইকারী মাছের আড়ৎসহ আরও কয়েকটি আড়তে গভীর রাতে জাটকা ইলিশ বিক্রি হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেক্টরকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে জাটকা বিক্রির এ কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং সেগুলো দূর দূরান্তের এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। আর গভীর রাতে জাটকা বেচাকেনা হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের নজরে আসে না।
বাদুরা মৎস্য অবতারণ কেন্দ্রে জাটকা বিরোধী অভিযান পরিচালনার কথা স্বীকার করে কোস্টগার্ডের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যন্ট কমান্ডার এম মামুনুর রহমান জানান, সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে আহরিত ১৬ মন জাটকা বিক্রির সময় সেগুলো বাদুরা মৎস অবতারণ কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এরপর সেগুলো ভান্ডারিয়ার ছয়টি এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
তার দাবি কোস্টগার্ড সদস্যদের সংখ্যা কম হওয়ায়, জাটকা নিয়ে আসার সময় স্থানীয়রা তাদের ঘিরে ধরে। তখন আত্মরক্ষার্থে কোস্টগার্ড সদস্যরা এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এদিকে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা আজাদ হোসেন জানান, এ বিষয়ে কোস্টগার্ড পুলিশকে কিছুই জানায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
এনটি