খুলনা: `আমরা এ সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগদিছি (ভুগছি) এই পানিতি (পানিতে)। আমাদের বৃষ্টি লাগে না।
জলাবদ্ধতার নোংরা পানি মাড়িয়ে যাওয়ার সময় মিন্টু শেখ বলেন, ভোটের আগে কাউন্সিলর ওয়াদা করেছিলেন জিতলে আমাদের রাস্তা করে দেবেন, এটা করে দেবেন, ওটা করে দেবেন। এখন তিনি বছরেও একবার আসেন না। আমাদের এই যে পায়ে ঘা হয়ে গেছে, তবুও কাউন্সিলর আসেন না। ডাকলেও আসেন না। এ জায়গায় একটা লোক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যায় না।
১২ নং রোডের স্কুলছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি জানায়, বছরে ৮ মাস পানি থাকে এ এলাকায়। যার কারণে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়।
বাস্তুহারা কলোনির বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক নাসির উদ্দিন বলেন, এ এলাকায় প্রশস্ত ড্রেন থাকলেও তা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে জলাবদ্ধতা এই এলাকার মানুষের নিয়মিত দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা সমাধানের কথা বললেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এলাকাবাসী বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকার শতাধিক পরিবার ৮ মাস ধরে জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েন। পচা পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করার কারণে সর্দিজ্বর ও চর্মরোগসহ পানি বাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।
আক্ষেপ করে তারা বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানির সুবিধা নেই এই কলোনিতে। তার পরও আমরা মহানগরীর বাসিন্দা। ভোটের সময় বিশাল এই কলোনির প্রায় ২০ হাজার ভোটারের কদর বেড়ে যায়। এরপর আর কেউ খোঁজ নেয় না। বর্ষা মৌসুমে আমরা পানিবন্দী হয়ে থাকি। এবার শীতেও সেই একই অবস্থা।
জানা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে পচা পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার লোকজনকে। বাস্তুহারা কলোনির দুই পাশে জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি হয়েছে। কলোনির পাশে ৪০ থেকে ৫০ ফুট প্রশস্ত খাল ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে শুষ্ক মৌসুমেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম ডি মাহফুজুর রহমান লিটনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আর কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এখনই খোঁজ নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০ , ২০২১
এমআরএম/এমএমজেড