ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ

আয়োজন যাদের নিয়ে তারাই উপেক্ষিত!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
আয়োজন যাদের নিয়ে তারাই উপেক্ষিত!

সিলেট: মঞ্চের সামনের সারিগুলোতে অতিথি। এরপর রাজনৈতিক নেতাদের জন্য সফেদ কাপড়ে সাজিয়ে রাখা রাজকীয় চেয়ার।

আর পেছনে সাধারণ প্লাস্টিকের চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়েছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন আয়োজিন অনুষ্ঠানে এমন দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।

যাদের জন্য আয়োজন, সেই বীরদের পেছনে রেখে সিলেটে অনুষ্ঠিত হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ। বিষয়টি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককে ব্যথিত করেছে। উপস্থিত লোকজনও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সমাবেশস্থলে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে এমন অবস্থা দেখে ক্ষোভ নিয়ে উপহার পাওয়া একটিমাত্র চাদর হাতে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যান। অথচ সিলেট জেলা প্রশাসনের চিঠিটাই ছিল জাতির জনক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করে। ‘সুবর্ণ জয়ের নিশান ওড়ে’, বিজয় পথে পথে। এমন স্লোগানে সিলেট জেলা প্রশাসনের ছাপানো চিঠি। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন উপেক্ষিত।

এ নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সিলেট মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সাবেক সভাপতি ভবতোষ বর্মণ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে জিনিস চান। অনেকে তা বুঝতে পারেন না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করা মানে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করা। মূলত ২৩ বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে ছিল। তাই মানসিকতার পরিবর্তন আসতে সময় প্রয়োজন। তবে, আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক তার চেয়ার আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।  

সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনুষ্ঠান। অথচ তাদের পেছনে বসতে দেওয়া হয়েছে। জাতীয়ভাবে বৈষম্য চলছে। এটা প্রতিহত করা প্রয়োজন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসার ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, এই দেশে এমন একটা সময় গেছে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পাননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সেই সম্মান দিয়েছেন। যার ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখতে চাই।

তিনি প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনারা মনে রাখবেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধারা আপনার আমার মতো শিক্ষিত না। যুদ্ধকালীন অনেক কম শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত লোকজন দেশের জন্য অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন। তাদের জন্যই আজ আমরা স্বাধীন দেশে এই চেয়ারে বসতে পেরেছি। সুতরাং বীর মুক্তিযোদ্ধারা যদি কখনো যেকোনো বিষয়ে সহযোগিতার জন্য যান, আপনারা প্রাণ খুলে তাদের সহযোগিতা করবেন। মনে রাখবেন, এই দেশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
এনইউ/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।