ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এলজিইডির কল্যাণে বদলে গেল তাদের জীবন!

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এলজিইডির কল্যাণে বদলে গেল তাদের জীবন!

মেহেরপুর: স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজে সুযোগ পেয়ে বদলে গেছে মেহেরপুর জেলার ১৮০ জন অবহেলিত নারীর জীবনধারা।  

চাকরি করে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন চলছে তাদের।

শুধু জীবনধারণই নয়, ভবিষ্যতের জন্যেও ব্যাংকে জমা হচ্ছে টাকা।

এলজিইডি আওতাধীন সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে বদলে গেছে অবহেলিত অসহায় বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, ভূমিহীন নারীদের জীবনধারা। এসব নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তারা মূলত সড়কের সোল্ডার, সড়কের পাশের জঙ্গল পরিষ্কার ও স্লোপে মাটি ভরাট করে থাকেন।

মেহেরপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ১৮টি ইউনয়িনে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি-৩ (আর.ই.আর.এম.পি) ও চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্মসূচির আওতায় ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, পরিবার প্রধান নারী ও ভূমিহীন ১৮০ জন অবহেলিত অসহায় নারী সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করছেন।

রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের সুমিত্রা বালা দাশ, সহড়াবাড়িয়া গ্রামের রাশিদা খাতুন, বামন্দী ইউনিয়নের তেরাইল গ্রামের চন্দনা দাশ ও ষোলটাকা ইউনিয়নের সহড়াবাড়িয়া গ্রামের দিপালী দাশ জানান, রাস্তার কাজ করে মাসে ছয় হাজার টাকা পাই। এছাড়া প্রতি মাসে ব্যাংকে তিন হাজার টাকা জমা হয়। জমানো ওই টাকা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।

একই ইউনিয়নের বানিয়াপুকুর গ্রামের তানজিরা খাতুন ও শিমুলতলা গ্রামের রাশিদা খাতুন জানান, আমরা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত নারী। আমাদের সংসারে দারিদ্রতা আর অশান্তি লেগেই থাকতো। খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিন কাটতো। রাস্তার কাজ পাওয়ায় সেই কষ্ট দুর হয়েছে। ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হতো। কাজ পেয়ে ধার-দেনা মুক্ত হয়েছি।

তারা আরও জানান, যখন কাজ ছিল না তখন আমাদের কোনো দাম ছিল না, কেউ খোঁজ-খবর নিতেন না। অনেকে আমাদের মানুষই মনে করতেন না, এখন তারাই আমাদের তাদের বাড়ির অনুষ্ঠানে যেতে দাওয়াত দেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মেহেরপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান জানান, জেলার ৩৬২ কি.মি. পাকা ও কাঁচা সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচিতে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে চুক্তিবদ্ধ ১৮০ নারী কাজ করছেন। এতে তাদের পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছতা এসেছে। পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্মসূচির প্রত্যেক কর্মীর ব্যাংক হিসাবে দৈনিক ১০০ টাকা জমা হয়। তিন বছরের মেয়াদ শেষে তারা সঞ্চিত অর্থ লাভসহ ফেরত পাবেন।

২০২৩ সালের জুন মাসে এ কর্মসূচি শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।