ঢাকা: বাণিজ্য-বিনিয়োগ, কানেকটিভিটি বাড়াতে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপের কুরুম্বা দ্বীপে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এবং ফাস্ট লেডি কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য-বিনিয়োগ, কানেকটিভিটি এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ বাড়াতে আমাদের অবশ্যই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও বাড়াতে হবে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সম্পাদিত তিনটির চুক্তির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আজকে আমাদের মধ্যে যেসব দলিল সই হয়েছে সেগুলো দুই দেশের জনগণকে আরও কাছাকাছি আনবে।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে দুই নেতার বৈঠকের পর সই হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো হলো- দ্বৈত কর পরিহার চুক্তিসহ বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞান (নবায়ন) সমঝোতা স্মারক এবং উভয় দেশের যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
একই অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পৌঁছালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেন। এ সময় শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান ও গান স্যালুট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যেকার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক সুসম্পর্ক রয়েছে এবং উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষার একই সমতলে অবস্থান করছে। সামনের দিনগুলোতে এই অভিন্নতার জায়গা থেকে আমরা একসঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বাস করি। যখন দেখি মালদ্বীপের ভাই-বোনদের সঙ্গে হাজার হাজার বাংলাদেশি একসঙ্গে দু’দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে কাজ করছে, তখন আমার খুবই ভাল লাগে।
করোনা মহামারির সময়ে দুই দেশ সহযোগিতার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
আন্তঃদ্বীপ সংযোগ, গ্রিন টুরিজম, জলবায়ু উপযোগী অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে মালদ্বীপের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সলিহর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা এবং করোনাকালীন পরিস্থিতির মধ্যেও পর্যটন শিল্প টিকিয়ে রাখতে মালদ্বীপ সরকারের দৃঢ় উদ্যোগের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির সুস্বাস্থ্য কামনা করে সেদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মালদ্বীপ যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সফর শেষে আগামী ২৭ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এমইউএম/এমআরএ