ফরিদপুর: জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় মোহাম্মাদ মাতুব্বর (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সময় তিনি জানান, শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে সালথার ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাতুব্বর একই গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, নারানদিয়া গ্রামের নুরু মাতুব্বরের সমর্থক আবেদ মাতুব্বরের সঙ্গে প্রতিপক্ষের ইউপি সদস্য ওহিদ মাতুব্বরের সমর্থক আবেদ শেখের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে শনিবার সন্ধ্যার দিকে পার্শ্ববর্তী বিনোকদিয়া বাজারে দুই আবেদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে উভয়পক্ষের সমর্থকরা সেখানে জড়ো হয়। একপর্যায় নুরুর সমর্থকদের চোর চোর বলে ধাওয়া করে বাজার থেকে বের করে দেয় ওহিদ সমর্থকরা। সে সময় দৌঁড়ে সরে যাওয়ার সময় মোহাম্মাদ মাতুব্বর নারানদিয়া সড়কে পড়ে গেলে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ওহিদ সমর্থকরা। এ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিনগত রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মোহাম্মাদ মাতুব্বরের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই ওহিদের সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করে নুরুর সমর্থকরা।
নিহত ব্যক্তির মেয়ে মাফুজা বেগম ও বড় ভাই ইনছুর মাতুব্বর অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, গত নির্বাচনে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ওহিদকে আমরা ভোট দেইনি। নির্বাচনের পর থেকে ওহিদ ও তার ভাই ব্যবসায়ী সাহেব আলী আমাদের নানাভাবে হয়রানি করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের গ্রামের আবেদ নামে দুই ব্যক্তির জমি নিয়ে মারামারির সময় ওহিদ ও তার ভাই সাহেবের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে মোহাম্মাদ মাতুব্বরকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে তাদের সমর্থকরা। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। আমরা এ হত্যার সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ওহিদ মাতুব্বর ও তার ভাই সাহেব আলী বলেন, জমি নিয়ে বাজারে কথা কাটাকাটির বিষয়টি নিয়ে নুরুর লোকজন রামদা নিয়ে এগিয়ে এলে আমাদের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। পরে জানতে পারলাম মোহাম্মাদ মাতুব্বর রাস্তার পড়ে গিয়ে আহত হয়ে মারা গেছেন। আর তিনি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। তার ওপর কেউ হামলা করেনি।
এ ব্যাপারে সালথা থানার ওসি আসিকুজ্জামান বলেন, হামলায় নিহত হওয়া ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নারানদিয়া গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
এসআরএস