ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি সংকট, ভোগান্তিতে পণ্যবাহী যান

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি সংকট, ভোগান্তিতে পণ্যবাহী যান ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচলে নানা ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। মাত্র দুটি ফেরি দিয়ে এ রুটে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

বাকি দুটি ফেরি দীর্ঘদিন থেকে বিকল হয়ে আছে।

শুরু থেকে এ রুটে চারটি ফেরি চলাচল করতো। দিন দিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও কমছে ফেরির সংখ্যা।  

নদী পারের অপেক্ষায় প্রায় দুই শতাধিক যানবাহন ঘাটে আটকা রয়েছে। দিনের পর দিন ফেরি পারাপারের জন্য বসে থাকতে হচ্ছে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চালক ও তাদের সহযোগীরা। আর বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে পণ্যের মালিকদের।  

সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।  

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে শুরু থেকে চারটি ফেরি দিয়ে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানসহ ছেট-বড় বিভিন্ন যানবাহন পারাপার করা হতো। একটি ফেরি বিকল হলে ফেরি সংখ্যা দাঁড়ায় তিনটিতে।  

কিন্তু গত কয়েকদিনে আরও একটি ফেরি বিকল হয়ে পড়ায় বাকি দুটি দিয়ে কোনোভাবে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় প্রায় সময় মেঘনা নদীর রহমতখালী চ্যানেলে ডুবোচরে আটকা পড়ে ফেরি। অনেকাংশে নদীতে ভাটার সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। কুয়াশার কারণেও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে এবং ভোলার ইলিশা ঘাটে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে।  

এ রুট দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার যানবাহন চলাচল করে বলে জানা গেছে।  

সরেজমিনে শুক্রবার রহমতখালী চ্যানেল ঘুরে দেখা গেছ, বিভিন্ন পয়েন্টে চর জেগে থাকায় নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে। গভীরতা বাড়াতে এ চ্যানেলে ড্রেজিং প্রকল্প চালু থাকলেও ড্রেজিং কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ড্রেজিং এর মাটি নদীর ঠিক কাছাকাছি ফেলা হয়েছে।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেজিং প্রকল্প চালু থাকলেও কোনোভাবে নদীর নাব্যতা বাড়ছে না। ফলে প্রায় সময় ফেরি ডুবোচরে আটকা পড়ে।  

মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটে অপেক্ষায় থাকা মালবাহী ট্রাক চালক ইমাম হোসেন, রহমান ও সফিকুল ইসলাম বলেন, এ রুটে ফেরি পার হতে চার-পাঁচদিন অপেক্ষায় থাকতে হয়। একদিকে ফেরি কম, অন্যদিকে প্রায় সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদীতে ফেরি আটকে থাকে। যার ফলে তারা ভোগান্তির মধ্যে পড়ে।  

লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের প্রান্তিক সহকারী রেজাউল করিম রাজু বাংলানিউজকে বলেন, মাত্র দুটি ফেরি দিয়ে মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এ রুটে চারটি ফেরি ছিল। এর মধ্যে আগেই একটি ফেরি ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিনটির মধ্যে কলমীলতা ফেরি গত এক সপ্তাহ থেকে বিকল রয়েছে। সেটি মেরামত করে এক ট্রিপ চলার পর দুটি ইঞ্জিনের মধ্যে একটি ইঞ্জিন পুনরায় বিকল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে কৃষাণী এবং কুসুমকলি ফেরি সচল রয়েছে। একটি ফেরি দিনে দুই ট্রিপ দিতে পারে। প্রতি ট্রিপে ৯-১০টা ট্রাক এবং প্রায় ১০টা ছোটগাড়ি পারাপার করা যায়। আর যাত্রীবাহী বাস দেওয়া যায় ৫-৬টি।  

তিনি জানান, প্রয়োজনের চেয়ে ফেরির সংখ্যা কম হওয়ায় প্রায় দুই শতাধিক যানবাহন ফেরিঘাটে আটকা পড়ে আছে। এতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।