পাবনা (ঈশ্বরদী): পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটভাটা। শুধু উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নেই রয়েছে ৩৮টি অবৈধ ইটের ভাটা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলার ১২ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীরবর্তী কামালপুর, বিলকেদার, দাদাপুর জুড়ে রয়েছে ৩৮টি অবৈধ ভাটা। ইটভাটা নির্মাণে উদ্যোক্তারা কোনো সরকারি আইনের তোয়াক্কা করছে না। ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের কয়লা, তৈল জাতীয় পদার্থ, গাছের গুঁড়ি। আবার কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বেশিরভাগ ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে গাছপালা কেটে ব্যবহার করছে। আর গাছপালা কেটে ইটভাটা পোড়ানোর জন্য একদিকে ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল। অন্যদিকে, মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ইটভাটার কলো ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট, সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী।
লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে কয়েকটি ইটভাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চরের ফসলি জমিতে এসব ইটভাটা নির্মিত হয়েছে। ভাটা নির্মাণে যে উচ্চতায় চিমনি ব্যবহার করা দরকার, বাস্তবে ভাটামালিক তা না মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে গাছের গুঁড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। বেশিরভাগ ভাটা মালিকরা পদ্মার চরের অনাবাদী জমি, (যে জমিতে ফসলি না) সেখান থেকে ট্রাকে মাটি এনে অবৈধ ইটভাটায় ব্যবহার করছেন।
ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয় বাংলানিউজকে জানান, লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে যে ভাটাগুলো রয়েছে, তা পুরোনো ছাড়পত্র নিয়ে চলছে। নতুনভাবে কোনো অনুমতি ভাটা মালিকদের দেয়নি। কারণ ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনায় ইটের পরিবর্তে ব্লক ইট তৈরির নির্দেশনা আসছে। কিছুদিনের মধ্যে একটিও অবৈধ ইটভাটা আর থাকবে না।
লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আনিস-উর-রহমান শরীফ বাংলানিউজকে জানান, লক্ষ্মীকুন্ডায় যতোগুলো ইটভাটা রয়েছে, সবগুলোই অবৈধ! কোনো বৈধতা নাই! আমি কোনো অন্যায় কাজ প্রশ্রয় দেয় না বলে, কেউ পরিষদে আসে না। ইউনিয়ন পরিষদে কোনো ট্যাক্স-ভ্যাট দেয় না, এ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি কেউ!
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইউএনও) পি.এম. ইমরুল কায়েস বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী উপজেলার অবৈধ ইটভাটা মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে। রোববার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীকুন্ডার দুইটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এনটি