রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভুয়া পরিচয় দেওয়া দুই সহদোরকে ওয়াকিটকিসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর কোনো থানা কিংবা পুলিশ ফাঁড়িতে ওয়াকিটকি খোয়া গেছে কি না-তা জানতে চেয়ে আরএমপি সদর দফতর থেকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
এর আগে, গত শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নগরীর শিরোইলে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের সময় তাদের আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ওয়াকিটকি উদ্ধারের ঘটনায় রাজশাহী পুলিশে তোলপাড় চলছে।
গ্রেফতার দু’জন হলেন- মহানগরীর শাহ মখদুম থানার বড় বনগ্রাম বাগানপাড়া এলাকার মাভেল ইসলাম (২৪) ও তার ভাই নেহাল ইসলাম নিরো (২২)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা একটি থানার ওসি ও এসআইয়ের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি ওই দুজনকে অন্য স্থানে বদলি করা হয়েছে। গ্রেফতার দুজন ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাও জড়িত ছিলেন। তাদের নামে আগেই অন্তত চারটি মামলা আছে।
আরএমপি সদর দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই ছিনতাইকারীর কাছে কী করে পুলিশের ওয়াকিটকি গেল, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিটি থানায় ওয়াকিটকির সংখ্যা যাচাই করা হচ্ছে। সেগুলোর সংখ্যা ঠিক আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এছাড়া এ বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দলও কাজ শুরু করেছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর কর্ণহার এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম এমভি সাফারী নামের একটি কোচে ঢাকা থেকে রাজশাহীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডে নামেন। এ সময় তরিকুলকে টানতে টানতে টার্মিনালের ভেতরে নিয়ে যান মাভেল ইসলাম ও তার ভাই নেহাল ইসলাম। ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা তরিকুলের শরীর তল্লাশির নামে পকেটে থাকা ছয় হাজার টাকা ও একটি মুঠোফোন কেড়ে নেন। গাঁজা ও ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে ভয় দেখিয়ে তরিকুলের মুঠোফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছে বিকাশে আরও টাকা চাওয়া হয়।
তরিকুল সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে ওয়াকিটকি বের করে তাকে মাদক মামলা দিয়ে চালান করার ভয় দেখানো হয়।
আরও জানা যায়, টার্মিনালে সেই ঘটনা দেখে উৎসুক লোকজন ভিড় করেন। এরই মধ্যে ভিড় দেখে সেখানে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশের একটি টহল দল গিয়ে পৌঁছায়। পুলিশ দেখে ওই দুজন পালানোর চেষ্টা করে। পরে তাদের আটক করা হয়। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরিকুল ছিনতাই মামলা করেন।
মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার দু'জনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছিনতাই মামলা করেছেন। মামলায় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) আদালতে অভিযুক্ত দুজনের বিষয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে এদিন রিমান্ড আবেদন শুনানি হয়নি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ওয়াকিটকি পুলিশের কিনা সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এনিয়ে যাচাইবাছাই চলছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, তাদের ওয়াকিটকি আসলে কার বা তাদের নিজস্ব যোগাযোগের কিনা তা জানতে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২
এসএস/এমএমজেড