ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর সদরে অবস্থিত এতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির একটি বেঞ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বাড়ি নেওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ মোল্যা এ ব্যাপারে বলছেন, প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কেউ ব্যক্তিগত কাজে নিতে পারেন না।
আর অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক মো. মোহাসীন আলম প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকের পছন্দের প্যানেলে ভোট না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় বেঞ্চ চুরির অভিযোগ দিয়েছেন।
সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠানের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী এ ব্যাপারে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রেস ব্রিফিংও করেছেন। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের এ টানাপোড়েনে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্টের আশঙ্কা করছেন অভিভাবক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়ের শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
জানা যায়, উপজেলার পৌর সদরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি। বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৪শ’ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। শতবর্ষী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম রয়েছে জেলার সর্বত্র। দিন দিন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান কমছে। অভিভাবকরা শিক্ষার মান নিয়ে চরম হতাশ। শিক্ষার মান পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অধিকাংশ সহকারী শিক্ষকরা আজ পরস্পর মুখোমুখি অবস্থান করছেন।
প্রধান শিক্ষক এক দিকে, অন্য দিকে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে রয়েছেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, নবনির্বাচিত শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা। বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী সম্প্রতি এক বেঞ্চের ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
মো. মোহাসীন আলম নামে এক শিক্ষক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে সম্প্রতি বিদ্যালয়ের একটি পুরনো বেঞ্চ কয়েকদিনের জন্য বাসায় নেন। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের কারো সঙ্গে আলোচনা না করে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ মোল্যা থানায় অভিযোগ দেন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. মোহাসীন আলম তার সম্মান এবং মর্যাদা হানি হওয়ায় এর সুষ্ঠু বিচারও চেয়েছেন। বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কারো সঙ্গে কথা না বলে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন, যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আ. আজিজ মোল্যা বলেন, অন্যায়ের সঙ্গে কখনো আপোষ করি না। স্কুলের সম্পদ কেউ ব্যক্তিগত কাজে নিতে পারে না। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
এসআই