ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টেঁটা যুদ্ধের ঘটনায় ২ ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ১৮ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
টেঁটা যুদ্ধের ঘটনায় ২ ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ১৮ 

নরসিংদী: নরসিংদীর সদর ও রায়পুরা চরাঞ্চলের সহিংসতা ও টেঁটা যুদ্ধের মূলহোতা দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

এ নিয়ে গত দুই দিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অস্ত্র, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ও দুটি বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।  

মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্য্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতাররা হলেন- নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী এলাকার আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু (৫০), আবদুল মতিন মেম্বার (৫৮) ও তাদের পাঁচ সহযোগী, রায়পুরা থানার মির্জারচর এলাকার মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিক ও স্থানীয় আরও তিন টেঁটাযুদ্ধের হোতা।

অন্যদিকে ডাকাতদলের সদস্যরা হলেন- মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকার জাহিদুল হক টিপু, মো. শাহ আলম, সোহাগ মিয়া, পলাশের ঘোড়াশাল এলাকার নূরে আলম, রুবেল, আল আমিন ও আবু তাহের।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিক ও ফারুকুল ইসলাম ফারুকের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। শুধুমাত্র তারা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য গ্রামের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করে টোঁটা যুদ্ধ ও সহিংসতা ঘটিয়ে আসছে। গত ২৯ জানুয়ারি শনিবার মানিক চেয়ারম্যান আধিপত্য ধরে রাখার জন্য ফারুকের ওপর হামলা করে। ফলে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়। এর ফলে সোমবার রাত ৮টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিককে একটি দুই নলা বন্দুক ও চারটি কার্তুজসহ গ্রেফতার করে রায়পুরা থানা পুলিশ। একই দিনে মির্জারচর ও বাঁশগাড়ী এলাকার টেঁটাযুদ্ধের সহকারী হিসেবে চিহ্নিত আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধেও আধিপত্য বিস্তার ও টেঁটাযুদ্ধের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া গত ৩০ জানুয়ারি (রোববার) বিকেলে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু (৫০), স্থানীয় টেঁটাযুদ্ধের হোতা হিসেবে চিহ্নিত আবদুল মতিন মেম্বার (৫৮), আসাদুল্লা মিয়া ও তাদের চার সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সবার বিরুদ্ধে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশে গ্রামবাসীদের একাধিকভাগে বিভক্ত করে টেঁটাযুদ্ধের উস্কানির অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় একাধিক হত্যা মামলাও রয়েছে।

এদিকে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কুখ্যাত ডাকাত শাহ আলমসহ তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে মাধবদী থানা পুলিশ। এসময় ডাকাত শাহআলম পিস্তলের বাট দিয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামানকে মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ১২৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি শনিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে ঘোড়াশাল মিয়াপাড়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বিদেশি পিস্তল, কাভার্ডভ্যান ও সিএনজিসহ মোট চার ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।

পৃথক চারটি অভিযানে গ্রেফতাররা আসামিদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি পাইপগান, দুটি চাইনিজ কুড়াল, ছয়টি কার্তুজ, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা, দুটি ছোরা, একটি কাভার্ডভ্যান ও একটি অটোরিকশা জব্দ করা হয় ।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেফতারদের মধ্যে ৭ জন ডাকাতদলের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। এছাড়া দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিজেদের স্বার্থে উস্কানি দিয়ে চরাঞ্চলে সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।