ঢাকা: প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ‘জনপ্রশাসন পদক’ এর নাম বদলে চলতি বছর থেকে নতুন আঙ্গিকে এই পদক দেওয়া হবে।
পদক দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা-২০২২’ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ব্যক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১২টি ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হবে। চলতি বছর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দিতে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) আবেদন আহ্বান করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এই পদকের নীতিমালায় বলা হয়, জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের সৃজনশীল ও গঠনমূলক কার্যক্রম উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিতকরণ ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকার প্রতি বছর জনপ্রশাসন পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পদক প্রদানের কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা-২০১৫ (২০১৬ সালে সংশোধিত)’ বাতিল করে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।
সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রশাসন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, মানব উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, দুর্যোগ ও সঙ্কট মোকাবিলা, অপরাধ প্রতিরোধ, জনসেবায় উদ্ভাবন, সংস্কার, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
সরকারি কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, দলগত বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারি কর্মচারী/প্রতিষ্ঠানের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত কার্যপরিধির ওপর বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক বিবেচনা করা হবে।
পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট, ১৫ গ্রাম) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সম্বলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।
পদকপ্রাপ্তদের ব্যক্তিগত অবদানের জন্য ২ লাখ টাকা এবং দলগত অবদানের জন্য ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা হবে ৫ জন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট এবং নগদ পুরস্কারের ৫ লাখ টাকা তাদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ডোসিয়ারে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক অন্তর্ভভুক্ত থাকবে। সরকার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ কমাতে-বাড়াতে পারবে।
কোনো সরকারি কর্মচারী তার একই প্রকৃতির একটি কাজের জন্য একবারই পদক পাবেন। কোনো সরকারি কর্মচারী তার কোনো অবদানের জন্য অন্য কোনো জাতীয় পদকের জন্য একবার পুরস্কার পেলে তিনি তার ওই কাজের জন্য ফের পদকের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা এবং ইতোপূর্বে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা নামের শেষে ‘পাবলিক অ্যাডমিস্ট্রেটিভ অ্যাওয়ার্ড’ এর সংক্ষিপ্তরূপ ‘পিএএ’ টাইটেল ব্যবহারের পরিবর্তে সরকারি আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে পোশাকের সঙ্গে সরকার অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারবেন।
রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে/নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যদি কোনো পদকপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এক বছর বা তার এর বেশি মেয়াদে চূড়ান্তভাবে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তবে সরকার তার পদক প্রত্যাহার করতে পারবে।
পদক দেওয়ার পর পদকপ্রাপ্তদের নাম, পদবি ও অবদানের তথ্য সরকারি গেজেটে প্রকাশ করতে হবে।
ইতোপূর্বে যারা জনপ্রশাসন পদক পেয়েছেন তাদের তথ্যও সরকারি গেজেটে প্রকাশ করতে হবে। পদকপ্রাপ্ত উদ্যোগ/অবদানের প্রচারণার লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের অবদানের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশনার ব্যবস্থা নেবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দিতে জেলা বাছাই কমিটি, বিভাগীয় বাছাই কমিটি, মন্ত্রণালয়/বিভাগ পর্যায়ে বছাই কমিটি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাছাই কমিটি ও জাতীয় কমিটি থাকবে।
২০১৬ সালের ২৩ জুলাই প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হয়। প্রতি বছর ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপনের অংশ হিসেবে এই পদক দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এমআইএইচ/এমএমজেড