ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রাকচাপায় ছাত্রের মৃত্যু: ৫ ট্রাকে আগুন, ভিসির বাসভবন ঘেরাও

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
ট্রাকচাপায় ছাত্রের মৃত্যু: ৫ ট্রাকে আগুন, ভিসির বাসভবন ঘেরাও

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ট্রাকের চাপায় মাথা পিষ্ট হয়ে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে তারা সেখানে অবস্থান নেন।

উপাচার্যের বাসভবনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে, রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

রাত ৯টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে দুর্ঘটনায় গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল নিহত হন। তিনি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র। এ সময় সিরামিক ও ভাস্কর্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান প্রামাণিক আহত হন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে দুটি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে একটি হল নির্মাণ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের সামনে। অন্যটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের পাশে। শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে একাডেমিক ভবন নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজে ট্রাকযোগে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে হিমেল ও রায়হান মোটরসাইকেলযোগে ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরছিলেন। পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নির্মাণ সামগ্রীবাহী একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই হিমেল মারা যান। রায়হানকে আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।


ট্রাকচাপায় সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ৫টি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসে অনিরাপদ এবং অপরিকল্পিতভাবে কাজ চলছে। এ কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার পর প্রক্টরকে জানানো হলে তিনি মিটিংয়ের অজুহাত দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। এমনকি এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আমরা হিমেল হত্যার বিচার চাই। ভবিষ্যতে যেন আর এমন কোনো ঘটনা না ঘটে।

পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা নিজেদের সবচেয়ে নিরাপদ মনে করি। সেখানে যখন আমাদের সহপাঠীকে নিজের জীবন দিতে হয় তখন আদৌ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা আছে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আমাদের বন্ধুর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলি বাংলানিউজকে বলেন, হবিবুর রহমান হলের সামনে ট্রাক ও মোটর সাইকেলের সংঘর্ষে একজন ছাত্রের প্রাণ গিয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে যাতে এরকম দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য কড়াকড়ি নির্দেশনা দেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমরা এখন মেডিকেলে যাব। আহত রায়হান এখন শঙ্কামুক্ত। ক্যাম্পাসে সব নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে। ট্রাকচালককে গ্রেফতার ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন:
ট্রাকচাপায় রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৫ ট্রাকে আগুন
রাবিতে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী নিহত

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।