ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমিহীনের বন্দোবস্তের জমি প্রভাবশালীদের দখলে ! 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
ভূমিহীনের বন্দোবস্তের জমি প্রভাবশালীদের দখলে ! 

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের শহরতলী শম্ভুগঞ্জ নেত্রকোনা-হালুয়াঘাট বাইপাস মোড় এলাকার ভূমিহীন হাসমত আলী নামের এক হতদরিদ্র ব্যক্তিকে ১৯৭৮ সালের ১৭ জানুয়ারি ১৯ শতক জমি বন্দোবস্তো দিয়েছিল সরকার। ওই জমিতে ফসল ফলিয়ে সুখেই দিন কাটছিল হাসমত আলীর।

 

কিন্তু স্থানীয় এক প্রভাবশালীর কু-দৃষ্টিতে হতদরিদ্র হাসমত আলীর সে সুখ আর বেশি দিন টিকেনি। এক সময় সরকারের বন্দোবস্তো দেওয়া সেই জমিটি বেদখল করে নেয় স্থানীয় প্রকৌশলী মজিবুর রহমান নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি।    

এদিকে ২০১৩ সালে হঠাৎ হাসমত আলীর মৃত্যু হওয়ায় এতিম সন্তানরা জানতেন না তার পিতা ১৯ শতক জমি বন্দোবস্তো পেয়েছিলেন সরকারের কাছ থেকে। তবে সম্প্রতি ব্যাংক হতে পিতার নামে ৫ হাজার টাকার ঋণ সংক্রান্ত একটি নোটিশ মারফত হাসমত আলীর পুত্র খোকন মিয়া জানতে পারে জমিটি বৈধ মালিক তার বাবা।  

কিন্ত এতদিনে সেই ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ইট-পাথরের ছোট-বড় দালান। গুঞ্জন রয়েছে,দখলকারী বিক্রিও করে দিয়েছেন সেই সম্পত্তি। অথচ ২০২১ সাল পর্যন্ত এই জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা হয়েছে হাসমত আলীর নামে।

খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চরণিলক্ষিয়া ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. রুবেল হাসান। তিনি জানান, ভূমি বন্দোবস্তের দলিল অনুযায়ী সদর উপজেলার চর রঘুরামপুর মৌজার ১৫২২ খতিয়ানে ৯৭২ ও ৯৭৯ দাগে ১৯ শতক জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধসহ বি.আর.এস রেকর্ড মালিক হাসমত আলী।

কিন্তু সরকারের বন্দোবস্তের এই জমিটি জবরদখল বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই ভূমি কর্মকর্তা।

ভূমিহীন হাসমত আলীর ছেলে খোকন মিয়া বলেন, ২০১২ সালের দিকে প্রকৌশলী মজিবুর রহমানসহ কয়েকজন প্রভাবশালী আমার বাবার সম্পত্তি জবরদখল করে আধা পাকা দালান ঘর নির্মাণ করে গোপনে কয়েক জনের কাছে বিক্রি করেছেন বলে শুনেছি। অথচ এই জমির বৈধ মালিক আমার বাবা।  

বর্তমানে এই জমির মধ্যে দেড় শতক জমি দখলদার মো টিপু হাসান বলেন, কাগজপত্রে এই সম্পত্তির বৈধ মালিক ভূমিহীন হাসমত আলী। তবে তিনি মৃত্যুর পূর্বে জমিটি প্রকৌশলী মো মজিবুর রহমানের নিকট বিক্রি করেন। পরে আমি দেড় শতক জমির তার কাছ থেকে কিনেছি।      

তবে জমি কেনার দলিল বিষয়ে জানতে চাইলে দখলদার ব্যবসায়ী টিপু হাসান দলিল দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।  

এ বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।


বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।