টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে দিন দিন চুরি করা বালুর রমরমা বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিদিনই শতশত ভবন মালিক বা অন্যান্য কন্ট্রাকশনের কাজে সংশ্লিষ্টরা প্রতারিত হচ্ছেন।
সরেজমিন ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার পুংলীসহ আশেপাশের ৫৬টি স্থানে গিয়ে দেখা যায় চুরি করা বালুর রমরমা বাণিজ্য চলছে। ৪৫টি ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে বালু। আবার অন্য দুটি ট্রাকে সেখান থেকে বালু ওঠানো হচ্ছে।
ট্রাক চালক মকবুল হোসেন জানান, তিনি ভূঞাপুর থেকে বালু এনেছেন একজন ভবন মালিকের জন্য। খরচের কিছু টাকার জন্য তিনি এখানে ৩০ ফুট বালু বিক্রি করে দিয়েছেন। আরেক ট্রাক চালক ছানোয়ার মিয়া জানান, তিনিও ভূঞাপুর থেকে বালু নিয়ে করটিয়া যাচ্ছেন। কিন্তু যাওয়ার সময় তিনি পুংলী এলাকায় ৩০০ টাকায় কিছু বালু বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে করে তার খরচটাও বেচে যাচ্ছে অপরদিকে এই বালুর ক্রেতার কোনো গাড়ি ভাড়া লাগছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাক থেকে বালু কিনে নেওয়া এক ব্যক্তি জানান, অল্প খরচে তিনি প্রতি ট্রাক থেকে ৩০ থেকে ৪০ ফুট বালু কিনে রাখেন। এতে তার কোনো গাড়ি ভাড়া লাগে না। ট্রাকের চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাই ভবন মালিকদের জন্য নিয়ে যাওয়া বালুর কিছু অংশ এখানে বিক্রি করে দিয়ে যান। এতে ভবন মালিকরা প্রতারিত হলেও লাভবান হচ্ছেন ট্রাক চালক ও তারা।
আরেক চোরাই বালু ব্যবসায়ী জানান, তিনি ভূঞাপুরে বালুর পাশাপাশি সিলেটের লালবালু কিনে রাখেন ট্রাক থেকে। এরপর তিনি বিভিন্ন ক্রেতাদের কাছে এই বালু বিক্রি করেন। লাল বালু বিক্রি করেন ৫০ টাকা ফুট আর সাদা বালু বিক্রি করছেন দুই হাজার ৫০০ টাকা ট্রাক (শুধু বালুর দাম)।
টাঙ্গাইল পৌরশহরের তালতলা এলাকার সিদ্দিক হোসেন নামের এক ভবন মালিক জানান, তিনি পাঁচ তলা ভবনের কাজ শুরু করেছেন। এজন্য তিনি ভূঞাপুরের একজন বালু ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বালু আনছেন। কিন্তু প্রতি ট্রাকেই বালু ৫০০ ফুটের কম মনে হলে ট্রাক চালককে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, ঘাট থেকে বালু আনতে আনতে কিছু বালু রাস্তায় পড়ে যায়।
আলমগীর নামের বালু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বালু কেনার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, তিনিসহ বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরেই এই বালুর ব্যবসা করছেন। তারা বিভিন্ন ট্রাক চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওই ট্রাক চালকরা বালু বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের এখানে কিছু বালু নামিয়ে দিয়ে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২২
এসআইএস