পিরোজপুর: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় স্কুল ঘর দখল করে দোকান ঘর করেছেন ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির ছেলে। উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের ১১৩ নম্বর পূর্ব পশারীবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ঘর দখল করে দাতব্য চিকিৎসালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ব্যবসা করছেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, বাপ-দাদার জমিতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিধায় বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরটি দখল করে ব্যক্তিগত ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. খালেক খানের ছেলে মো. মাহামুদ হাসান খান। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, ২০২০ সালে উপজেলার ১১৩ নম্বর পূর্ব-পশারীবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকালীন সময়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় নির্মাণকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একটি টিনশেড ঘর করার জন্য। নতুন ভবন নির্মাণের পর অস্থায়ী টিনশেড ঘরটি আপসারণ না করে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. খালেক খানের ছেলে প্রভাব খাটিয়ে সেখানে পশারিবুনিয়া পাবলিক লাইব্রেরি ও দাতব্য চিকিৎসালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
সরেজমিনে গেলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ও সভাপতির পুত্রবধূ মোসাম্মৎ মরিয়ম আক্তার বলেন, টিনশেড ঘরটি তার স্বামী একটি ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টিভ মো. মাহামুদ হাসান খান পাবলিক লাইব্রেরি ও দাতব্য চিকিৎসালয়ের জন্য ব্যবহার করেন।
পরবর্তীকালে মুহূর্তে স্বামী মো. মাহামুদ হাসান খান ঘটনাস্থলে এসে জানান, ওই টিনশেড ঘরটি আমি তুলেছি। তবে জমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের।
এদিকে একজন ওষুধ বিপণনকর্মী সাইনবোর্ডে পল্লীচিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, সাবেক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ লেখা নিয়ে এলাকায় রিতিমত একটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. খালেক খান বাংলানিউজকে জানান, স্কুলের জমি আমি দান করেছি। দানকৃত জমি বিভিন্ন দাগে রয়েছে। টিনশেড ঘরটি যেখানে আছে সেটা আমার জমি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয়ভাবে সভাপতির সঙ্গে সমাধান করতে না পেরে গত ৫ ডিসেম্বর ২০২১ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিখিতভাবে অবহিত করেছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘরটি সরাতে বলার পরেও সভাপতি তা আজ পর্যন্ত সরায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাসীর উদ্দিন খলিফা বলেন, বিদ্যালয়টি নতুন ভবন নির্মাণকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একটি অস্থায়ী টিনশেড ঘর নির্মাণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। নতুন ভবন নির্মাণের পর টিনশেড ঘরটি না সরিয়ে সভাপতির ছেলে সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। প্রধান শিক্ষকের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকতদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরটি সরাতে বললে তিনি ঘরটি সরাননি। তারা বলছে দানকৃত জমি বিভিন্ন দাগে রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি জমির সীমানা নির্ধারণসহ বেদখল জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে সহযোগিতা চেয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২২
এনটি