ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় জাল ও বিষটোপ দিয়ে অবাধে চলছে পাখি শিকার। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে প্রতিবছরে মতো এবারও শীতের মৌসুমে দেশি জাতের বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আনাগোনা বেড়েছে।
মাঠের ফসলের জমিতে চাষাবাদ ও পানি দেওয়ার সময় সাদা বক, শালিক, চড়ুই, ডাহুক, ঝুটকুলিসহ বিভিন্ন দেশি প্রজাতির পাখি মাটির নিচে থেকে উঠে আসা পোকামকড়সহ বিভিন্ন কিটপতঙ্গ খেতে জড়ো হয়। আর এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারিরা অবাধে পাখি নিধন করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তেলাপোকার মধ্যে বিষাক্ত ফুরাডান কীটনাশক ঢুকিয়ে ছেড়ে দিলেই সেই বিষাক্ত তেলাপোকা খেয়ে পাখিগুলো অসুস্থ হয়ে মাটিতে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ সময় পাখিগুলো ধরে কাছে থাকা ব্লেড, ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়।
এছাড়া বড় বাঁশের সঙ্গে আকাশের দিকে উচুঁ করে বড় ধরনের জাল পেতে রাখা হয়। এ পদ্ধতিতে পাখিদের তাড়া করলেই পাখিগুলো উড়তে গিয়ে জালে বেঁধে যায়। আর শিকারীরা পাখি ধরে বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে। পরে সময়মত পাখিগুলো বিক্রি অথবা জবাই করছে। প্রতিদিনই মেগচামী, নরকোনা, কোরকদি, আড়পাড়া, চৈত্রার বিল মাঠে অবৈধভাবে পাখি শিকারিরা পাখি নিধনযজ্ঞে মেতে উঠেছে।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন ওই এলাকার পাখি প্রেমী মেহেদী হাসান পলাশ। তিনি বলেন, পাখি নিধনের হাত থেকে পাখিদের বাঁচাতে একমাত্র প্রশাসনকেই ভূমিকা নিতে হবে। আর জনগণতে সচেতন করতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে সকল মাঠেই পাখি দেখা যাচ্ছে। এসব পাখি শিকারে এক শ্রেণির অসাধু লোকজন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাখি শিকারের ফলে পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে। পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। এ কাজে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়, পাখি শিকারের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার করা একটি অপরাধ। সংবাদ পেলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২
এনটি