ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ত্রীকে দিয়ে ডিসিকে বিপদে ফেলার চেষ্টা, শাস্তি পেলেন উপসচিব 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২
স্ত্রীকে দিয়ে ডিসিকে বিপদে ফেলার চেষ্টা, শাস্তি পেলেন উপসচিব 

ঢাকা: দ্বিতীয় স্ত্রীকে ভুয়া সাংবাদিক বানিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিব্রত করা ও বিপদে ফেলার চেষ্টায় এক উপসচিবকে লঘুদণ্ড হিসেবে বেতন গ্রেড অবনমিতকরণের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব (উপসচিব) আবু জাফর রাশেদ (পরিচিতি নম্বর-১৬০০১) মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট থাকার সময়ের ওই অপরাধে এ শাস্তি পেয়েছেন।

 

গত ১ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আবু জাফর রাশেদ মুন্সীগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তার উপস্থিতিতে তার প্ররোচনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী একটি পত্রিকার ভুয়া সাংবাদিক সেজে মুন্সীগঞ্জ জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিব্রত করা ও বিপদে ফেলার লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক সব ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে মর্মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে টেলিফোন করে মিথ্যা তথ্য দেন।  

তিনি সরকারের একজন উপসচিব হয়েও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন সম্পর্কে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর মাধ্যমে সিনিয়র কর্তাব্যক্তিদের কাছে উক্ত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী আনীত ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারির মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা আবু জাফর রাশেদ ২০২০ সালের ২৫ মার্চ লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করলে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং শুনানিতে প্রায় তার মৌখিক বক্তব্য লিখিত জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক গত ৬ জানুয়ারি দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে আবু জাফর রাশেদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী আনীত ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত দেওয়া হয়।

‘তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজাদি পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে তার বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪ (২) (ঘ) বিধি অনুসারে তাকে তিন বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ নামীয় লঘুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আবু জাফর রাশেদের বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনা করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪ (২) (ঘ) বিধি অনুসারে তাকে তিন বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নভর ধাপে অবনমিতকরণ নামীয় লঘুদণ্ড দেওয়া হলো।  

দণ্ডের মেয়াদকালে তিনি জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর গ্রেড-৫ (টাকা ৪৩০০০-৬৯৮৫০/-) এর ৪৩০০০/- টাকার ধাপে বেতন প্রাপ্য হবেন। তিনি ভবিষ্যতে উক্ত মেয়াদের কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না এবং উক্ত মেয়াদে বেতন বাড়ার জন্য গণনা করা যাবে না। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।