ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক বছরেও উদঘাটন হয়নি শিক্ষার্থী রোহান হত্যার রহস্য

সাগর ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
এক বছরেও উদঘাটন হয়নি শিক্ষার্থী রোহান হত্যার রহস্য

সাভার (ঢাকা): দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও সাভারের দশম শ্রেণির ছাত্র রোহানুল ইসলাম রোহান (১৯) হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু উদঘাটন হয়নি। এদিকে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বিভিন্ন দফতরে ঘুরে বেরাচ্ছেন নিহতের পরিবার।

রোহানের পরিবার জানায়, বর্তমানে মামলাটি সাভার মডেল থানায় থাকলেও দীর্ঘ সময় পরেও তদন্তের কোনো অগ্রগতি না পেয়ে তাদের পরিবার চায় মামলাটি পিআইবি বা সিআইডির অধীনে দেওয়া হোক। এছাড়া সেই মামলায় উল্লেখিত কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলেও প্রধান আসামি এখন অব্দি জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেয়নি পুলিশ।

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) রোহান হত্যার এক বছরে এসে রোহানের বাবা মো. সোবহান মিয়া ও মা আছমা আক্তার তাদের বাড়িতে এমন আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে এসব কথা জানান।

রোহানের মা আছমা আক্তার বলেন, ‘রোহানুল ইসলাম রোহান আজকের এই দিনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এখন একজন সন্তান হারা মা। আমার ছেলেকে সেদিন সিয়াম ও জোবাইয়ের বাসা থেকে সেদিন সন্ধ্যায় বের করে নিয়ে যায়। কিন্তু পরে আমার ছেলে আর ফিরে আসেনি। ’

আছমা আক্তার বলেন, ‘আমি একবছর যাবৎ বিচার চাইছি। কিন্তু এখনও কোনো বিচার পায়নি। আমার ছেলে একজন ছাত্র। আমার ছেলেকে যারা মারলো তাদের বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। আবরার হত্যার যেমন বিচার হয়েছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের তেমন ফাঁসি হোক। কি কারণে আমার ছেলেকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে মারলো আজও আমি জানতে পারলাম না। ’

রোহানের জেঠা মো. মকবুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাতিজা একজন ছাত্র। আজ তার মৃত্যুর এক বছর হয়েছে। আজও পর্যন্ত তার বিচার পেলাম না। প্রধান আসামিদের গ্রেফতার করা হলো না।

রোহানের বাবা সোবাহান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলেকে আজকের এই দিনে হত্যা করা হয়। এক বছরে কয়েকজনকে আটক করা হলেও প্রধান যে আসামি তাকে আটক করা হয়নি। আর যারা আটক হয়েছে তারা জামিনে প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে। এক বছর হয়ে গেলো আমার ছেলের হত্যার কোনো ক্লু পেলাম না। কি কারণে হত্যা হলো তাও জানতে পারলাম না। বাবা হিসেবে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে পারলেও মনটাকে শান্তি করতে পারতাম।

মামলাটির এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাভার পৌর এলাকার কর্ণপাড়ার বাসিন্দা মো. সোবহান মিয়ার ছেলে রোদেলা মডেল স্কুলে দশম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী রোহানুল ইসলাম রোহান (১৮)। তাকে গতবছর ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মো. রাহিদ, মো. হৃদয়, আসিফ, রাকিবুল ইসলাম রকি, মো. হৃদয় (২), আকিরুল, রবিউল, আপন, দুদুল, সিয়াম, শীখর, সজিব, সুফিয়ান হৃদয়, সাজ্জাদ ও ডানু মিলে সঙ্গবদ্ধ হয়ে মুড়ি মটকা মোড়ের এলাইড স্কুলের সামনে সুইচ গিয়ার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

মামলাটির সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা তাহমুদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই মামলায় আমার দায়িত্বের সময় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। পরে আমি যাওয়ার আগে সাভার মডেল থানার আরেক এসআই পাভেল সাহেবকে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী খবর জানা নেই।

কেন রোহানকে হত্যা করা হয়েছে? এটা কি জানা গেছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাদের ভেতর একটি পূর্ব শত্রুতা ছিল। তাই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়টি জানতে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. পাভেল মোল্লার মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এসএফ/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।