রাজশাহী: নিজস্ব সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ- ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, সামাজিক বন্ধন না থাকলে সম্পর্ক সুখের হয় না।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গ্রিন প্লাজায় ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট, রাজশাহী ২০২২’ আয়োজন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে দুই দেশের শিল্পীরা গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছেন। পঞ্চম বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট নতুন করে সাংস্কৃতিক বন্ধনকে জাগিয়ে তুলবে। এক সময় ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতির কারণে দুই দেশের সম্পর্কে ভাটা পড়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট, রাজশাহী ২০২২’ এর মাধ্যমে দুই দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিমূলক সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তালুকদার, রাজশাহী বিভাগের সংসদ সদস্যরা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
প্রস্তুতিমূলক সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট হলো দুই দেশের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততার একটা জায়গা। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ ঘটে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবার জন্য এ ধরনের কালচারাল অনুষ্ঠান আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প মুছে ফেলতে হবে।
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে দুই দেশের জনগণের সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, দুই দেশের হারিয়ে যাওয়া সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলোকে পুনরায় জাগিয়ে তুলতে হবে।
সভায় মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুই দেশের মৈত্রী চিরঞ্জীব রাখার জন্য আমাদের এ আয়োজন। আগেও এ ধরনের আয়োজন কয়েকবার হয়েছে, সৌভাগ্যবশত এবার রাজশাহীতে হতে যাচ্ছে। আশা করি আমরা সফলতার সঙ্গে এটি করতে পারবো। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের সঞ্চালনায় সভায় রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আসবেন। এবার ভারতের চারজন প্রাদেশিক মন্ত্রী, সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ৬০ জনের একটি প্রতিনিধিদল কালচারাল মিটে অংশ নেবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি সিঅ্যান্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে এবারের উৎসব শুরু হবে।
এদিন রাসিক মেয়রের পক্ষ থেকে ভারতীয় অতিথিদের নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। একই দিন বিকেলে উভয় দেশের অংশগ্রহণে রাজশাহী কলেজ মাঠে মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি বরেন্দ্র জাদুঘর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পুঠিয়া রাজবাড়ি, বাঘা মসজিদ, নাটোর রাজবাড়ি, নাটোরের উত্তরা গণভবন পরিদর্শন শেষে ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় অতিথিরা বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২
এসএস/আরআইএস