ঢাকা: ভিডিও কনফারেন্সে লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ার বেটেলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে দুই নেতা ভিডিও কনফারেন্সে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে প্রেস সচিব জানান, দুদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দুই প্রধানমন্ত্রী প্রায় আধা ঘণ্টা কথা বলেন। শুরুতে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য একে অপরকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান দুই নেতা।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে লুক্সেমবার্গকে দৃঢ় সমর্থক ও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন।
আলাপকালে দুই নেতা নতুন নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানের মাধ্যমে দুদেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর ও বিস্তৃত করতে একমত হন।
অনুদান হিসেবে ভ্যাকসিন দেওয়া ও বাজেট সহায়তার মাধ্যমে করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য ‘টিম ইউরোপ’-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতি ও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিষয়ে লুক্সেমবার্গ প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফ করেন শেখ হাসিনা।
গেল বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লুক্সেমবার্গের গ্র্যান্ড ডিউকের দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তার কথা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনে লুক্সেমবার্গের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ইস্যুতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন বলে শেখ হাসিনাকে নিশ্চিত করেন জাভিয়ার বেটেল।
রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (আরআইবিএ) কর্তৃক সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অবস্থিত লুক্সেমবার্গ-সমর্থিত 'ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল' ভবনের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন জাভিয়ার বেটেল।
শেখ হাসিনাও বাংলাদেশি ডিজাইনারের নকশায় নির্মিত ভবনটির স্থাপত্যশিল্পের প্রশংসা করেন।
লুক্সেমবার্গ বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহী। দুই প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন শিগগিরই দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এয়ার সার্ভিস চুক্তি সম্পন্ন হবে।
দুদেশের মধ্যেকার বাণিজ্য বাড়ানো ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে দুই নেতা আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অর্থনৈতিক সেক্টর ব্যবস্থাপনায় লুক্সেমবার্গের বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা এবং তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ার বেটেল জানান, তার দেশে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছে। এছাড়া বড় একটা সংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করছে।
জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার কথা লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ার বেটেলকে জানান শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) বাজারে জিএসপির মতো বাণিজ্য অগ্রাধিকার সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে লুক্সেমবার্গ সরকারের সহযোগিতা চান শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে সম্মত হন লুক্সেমবার্গ প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও দুই নেতা আলাপ করেন। বাংলাদেশের অবকাঠামো, ওয়াটার-ট্রিটমেন্ট, নগর উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেক্টরে লুক্সেমবার্গের ক্লাইমেট-স্মার্ট বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা।
শেষে লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ার বেটেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লুক্সেমবার্গ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনাও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ার বেটলকে বাংলাদেশের চলমান আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি দেখতে সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২, আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা
এমইউএম/আরবি