ঢাকা: জটিল ও কঠিন রোগের নিরাময়, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর কিংবা চাকরিতে পদোন্নতি। সকল সমস্যার সমাধানের জিনের বাদশার বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো অনলাইন বা স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কে।
এসব বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে কেউ যোগাযোগ করলেই হাতিয়ে নেওয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা। ছয় মাসে এই একটি চক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গাইবান্ধার বিভিন্ন এলকায় অভিযান চালিয়ে ওই ‘জিনের বাদশা’ চক্রের মূল হোতা মো. লুৎফর রহমান (২৬), আ. গফ্ফার (৩০) ও মো. শামীমকে (২৬) গ্রেফতার করেছে সিআইডি।
এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন অপারেটরের একাধিক সিমকার্ড জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালীবাগ সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, চক্রটি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও কেবল নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিবাহের বাধা দূর করা, চাকরিতে পদোন্নতি, কম দামে স্বর্ণ ক্রয়, বদ জিনকে বিতাড়িত করা, খন্নাস জিনকে পাতিল বন্দি করাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিজ্ঞাপন দিতেন।
সমস্যা সমাধানের জন্য যোগাযোগ করলে ভিন্ন কণ্ঠে কথা বলে সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে চক্রটি। পরে তাদের কথামতো কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। জিনের বাদশা সেজে এই প্রতারক চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল।
বিষয়টি নজরে আসলে কথিত ‘জিনের বাদশা’ চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রেফতার লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে আগেই মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তারা গভীর রাতে জিনের বাদশা ও পীর দরবেশ সেজে ফোন করে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শতাধিক জনের কাছ থেকে ছয় মাসে আনুমানিক অর্ধ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২
পিএম/এসআইএস