ঢাকা: রাজধানীর অভিজাত, মধ্যম আয় ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পানির পৃথক দাম নির্ধারণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, তিনটা ক্যাটাগরিতে পানির দাম নির্ধারণ করতে চাই, এটার রিসার্চ চলছে।
সরকারের কাছে পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা ওয়াসার এমডি বলেন, আমরা সরকারকে প্রস্তাব করেছি চার ভাগে। একটা হচ্ছে ১০০ ভাগ, একটা ৫০ ভাগ, একটা ৪০ ভাগ এবং একটা ২০ ভাগ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। তবে আমাদের প্রস্তাব হলো, ২০ শতাংশের কম যেন না হয়।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ওয়াসার এমডি।
তিনি বলেন, পানির মূল্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পানির উৎপাদন খরচ বেশি। কিন্তু বিনিময় মূল্য কম। সরকার ভর্তুকি দিয়ে চালাচ্ছে। ভর্তুকি হ্রাস করার জন্য কী করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা প্রতি বছর আলোচনা করি। তারই অংশ হিসেবে বোর্ড সভায় আলোচনা হয়েছে।
প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, প্রত্যেক বছর পানির মূল্য সমন্বয় করে থাকি। ৫ শতাংশ সমন্বয় করতে পারে বোর্ড। এর বেশি করতে পারে সরকার। প্রতি বছর আমরা ৫ শতাংশ করে দাম সমন্বয় করেছি, করবো।
ঢাকা ওয়াসার এমডি আরও বলেন, সরকার বলছে—ভর্তুকি কমিয়ে আনতে হবে। সরকার ভর্তুকি দেবে দরিদ্র মানুষের জন্য। ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো যথেষ্ট না। কারণ বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। আমরা সরকারকে প্রস্তাব করেছি চার ভাগে। একটা হচ্ছে ১০০ ভাগ, একটা ৫০ ভাগ, একটা ৪০ ভাগ এবং একটা ২০ ভাগ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। তবে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে ২০ শতাংশের কম যেন না হয়।
তিনি বলেন, সায়দাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত প্রতি এক হাজার লিটার পানির জন্য সংস্থাটির খরচ ২৫ টাকা, পদ্মা যশলদিয়ায় ২৭ টাকা এবং গন্ধবপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে সম্ভাব্য খরচ হবে ৩৫ টাকা।
২০২১ সালে পানির দাম বাড়ানোর পর রাজধানীর আবাসিক গ্রাহকরা প্রতি ১ হাজার লিটার পানির জন্য ১৫ টাকা ১৮ পয়সা গুনছেন। আর বাণিজ্যিক গ্রাহকদের প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম দিতে হয় ৪২ টাকা।
ওয়াসার প্রস্তাব অনুযায়ী ২০ শতাংশ দাম বাড়ালেও আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি হাজার লিটার পানির জন্য দাম গুনতে হবে ১৮ টাকা ২১ পয়সা। আর একই হারে দাম বাড়লে বাণিজ্যিক গ্রাহককে প্রতি হাজার লিটারের জন্য ৫০ টাকা ৪০ পয়সা হারে পানির দাম পরিশোধ করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াসার এমডি বলেন, পানির যেটি প্রকৃত উৎপাদন খরচ, আমরা তার চাইতে কম মূল্যে দিচ্ছি। আন্ডারগ্রাউন্ড পানির উৎপাদন খরচ কম। সার্ফেস ওয়াটারের ক্ষেত্রে পানির উৎপাদন খরচ বেশি। এছাড়া ডিস্টিংশন নেটওয়ার্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের বহু সংস্থা আছে, যারা সরকারের দেনা পরিশোধ করে না। কিন্তু ওয়াসাই একমাত্র সংস্থা, যাদের কোনো ঋণ বাকি নেই। ঋণের কোনো কিস্তি বকেয়া নেই।
রাজধানীর অভিজাত, মধ্যম আয় ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, তিনটা ক্যাটাগরিতে পানির দাম নির্ধারণ করতে চাই, এটার রিসার্চ চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক আবুল কাশেম ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়।
আরও পড়ুন: পানির দাম ন্যূনতম ২০% বাড়াতে চায় ওয়াসা
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
এমএমআই/এমজেএফ