ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নড়াইলের অধিকাংশ স্লুইচগেট অকেজো

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২
নড়াইলের অধিকাংশ স্লুইচগেট অকেজো

নড়াইল: নড়াইলের সর্ববৃহৎ চাঁচুড়ি বিল ও পাটেশ্বরী বিলে নদীর জোয়ার-ভাটার পানি নিষ্কাশিত হয় ছোট বড় চারটি খাল দিয়ে। কিন্তু নদী থেকে খালের মাধ্যমে পানি চলাচলের অধিকাংশ স্লুইচগেট অকেজো।

ফলে চলতি বোরো মৌসুমে নড়াইলের শস্যভাণ্ডার খ্যাত চাঁচুড়ি বিলের বড় অংশে বোরো উৎপাদন মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। জেলার ছোট-বড় ৫২টি বিলের একই দশা।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্লুইচগেটগুলোর কোনোটা মেরামত চলছে, আবার কোনটা অকেজো। দড়ি দিয়ে বেঁধে চলছে স্লুইচগেট ওঠানামার কাজ। এভাবে বছরের পর বছর ধরে চলছে নদী থেকে খালের পানি জমিতে ঢুকিয়ে সেচ কাজ। জোয়ারের পানি খালে ঢুকলেও অকেজো স্লুইচগেটের মাধ্যমে তা আর বের হতে পারে না।

নড়াইলের সর্ববৃহৎ চাঁচুড়ি আর পাটেশ্বরী বিলের মধ্যে চিত্রা নদীর পানি খালে ঢোকে পাটেশ্বরী স্লুইচগেটের মাধ্যমে। পাটেশ্বরী গেটের ১০টি দরজাই নষ্ট। পাশের টাকিমারার দুইটা, যাদবপুর, কোড়গ্রাম, জোলার খালসহ জেলার ৭২টি স্লুইচ গেট সবই চলছে একই কায়দায়।

পুরুলিয়া ইউনিয়নের দিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মিল্টন সর্দার বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে জোয়ার এলে ভাঙ্গা স্লুইচগেট দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে কিন্তু ভাটার সময় পানির বেগ কম থাকায় ঠিকমত বের হতে পারে না। তাছাড়া স্লুইচগেটের দরজা খোলা ও বন্ধ করার কোনো তদারকি না থাকায় সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে।

মহিষখোলা গ্রাম ও পাটেশ্বরী গ্রামের একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেট তদারকির অভাবে জোয়ারের লবন পানি জমি আটকে থাকে। ফলে ধান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যখন পানি প্রয়োজন নেই তখন পানি বের করা যায় না। আবার যখন সেচ কাজের জন্য পানি প্রয়োজন তখন পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। বর্তমানে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকায় অনেক জমিতে এখনো ধান রোপণ করা সম্ভব হয়নি। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চান তারা।

কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবীর কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, শীত মৌসুমে দুইবার ভারী বৃষ্টি, স্লুইচগেটের দিয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় এ বছর চাঁচুড়ি-পাটেশ্বরী বিলের কয়েক হাজার একর বোরো উৎপাদন ৩ মাস পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর দেরিতে রোপণ হলে ফসল ঘরে তুলতে বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাস লাগবে। তখন অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভবনা থকে। ফলে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে পারেন কৃষকরা।

পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, পলি পড়ে খালগুলো ভরাট হয়ে পড়েছে। ফলে জোয়ারের পানি প্লাবিত হয়ে ফসলের জমিতে ঢুকে পড়ছে। দ্রুতই স্লুইচগেটগুলো মেরামতের পাশাপাশি খালগুলোর ও সংস্কার প্রয়োজন।

নড়াইল পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে সাউথ ইস্ট প্রকল্পের আওতায় স্লুইচগেটের রেগুলেটর মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো মেরামত হলেই আশা করি বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।