পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দুমকিতে মোবাইল চুরির অপবাদে নাবিল (১৪) নামে এক কিশোরের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় রিপন মুন্সি নামে একজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে কিশোরের মা হাসিনা বেগম বাদী হয়ে দুমকি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই দুমকি থানা পুলিশ রিপন মুন্সী নামে একজনকে গ্রেফতার করে।
বুধবার দুপুরে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত রিপনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, এজাহার নামীয় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রানা মিয়াও তার সহযোগীরা পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদরাসার সামনে মোবাইল চুরির অপবাদে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাবিল নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও চুল কেটে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নাবিল বলে, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় বড় ভাইয়ের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদরাসায় কাজে গেলে মিস্ত্রী বলে কাজ হবে না। পরে ওই জায়গা থেকে আসার সময় শুনি হুজুরের মোবাইল চুরি হইছে। তারপর মাদরাসার হুজুর ও স্থানীয় লোকজন আমাকে সন্দেহ করে মারধর করে। কিছুক্ষণ পর রানা মেম্বার, রিপন মুন্সিসহ আরও কয়েকজন আমার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। মোবাইল পাওয়ার পরেও আমার ওপর এই অমানবিক, নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায় তারা।
পাঙ্গাশিয়া নেছারিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ ওলিউল্লাহ বলেন, নাবিলের বড় ভাই রবিউল আমাদের মাদরাসায় কাজ করে। নাবিলকে সকালে কাজে নিয়ে আসে রবিউল, এর কিছুক্ষণ পরে বেঞ্চের ওপর থাকা আমার মোবাইলটি পাচ্ছিলাম না। তাই নাবিলকে জিজ্ঞেস করলে সে অস্বীকার করে। এসময় রানা মেম্বরকে ফোনে ডেকে নাবিলকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে কারা নাবিলের মাথার চুল কেটে দিছে তা আমরা জানিনা।
এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রানা মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২
আরএ