ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ সিটি করর্পোরেশন (মসিক) এলাকার নতুন বাজার রেল ক্রসিং পচা পুকুর পাড় সংলগ্ন মাকরজানি খাল দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
এরই মধ্যে ওই প্রভাবশালীরা সরকারি খালের জায়গায় সাততলা ফাউন্ডেশন করে দুইতলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি খাল দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ ওঠার পর সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেই-নিচ্ছি করে কালক্ষেপণ করা হয়। কিন্তু শেষতক ওই সরকারি খালের জায়গা উদ্ধার না করে দখলদারকে ভবন নির্মাণের মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাদের ভাষ্য, সব জেনে বুঝেও রহস্যজনক কারণে নিরব মসিকের নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস। এর ফলে জলাবদ্ধতার হুমকিতে রয়েছেন নগরবাসী। যা সরকারের খাল বান্ধবনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলেও মনে করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এনিয়ে লিখিত অভিযোগকারী স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল খানসহ অনেকে জানান, সম্প্রতি মাকরজানি খালের ওপর অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করেন স্থানীয় আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে ২৩ জনের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এর মধ্যে ১১ শতাংশ ২৮ পয়েন্ট জমি তাদের কেনা বলে দাবি করা হচ্ছে। অথচ এ জমির উত্তরাংশে রেললাইন, পশ্চিমে মাকরজানি খাল এবং চলাচলের জন্য মাত্র ৭৫ পয়েন্ট জমি রয়েছে, যা তিন থেকে চার ফুট চওড়া রাস্তা।
বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা ভবন নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে বাধা দিয়ে সিটি কর্পোরেশনে লিখিত অভিযোগ করলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে অভিযান চালিয়ে ওই ভবন মালিকদের জরিমানাও করা হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার কয়েক মাস পর আবার রহস্যজনকভাবে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন ভবন মালিকরা। এরই মধ্যে ওই ভবনের দুইতলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ভবন মালিকদের একজন আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের কেনা জমিতে চার ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। এর আগে সিটি করর্পোরেশন সাময়িকভাবে আমাদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে পরে কাজ চালু করার লিখিত নির্দেশনা পেয়ে আবার কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস বলেন, খালের জমিতে ভবন নির্মাণের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর কাজ বন্ধ করাসহ জরিমানা আদায় করা হয়।
তাহলে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার পর কীভাবে দোতলা পর্যন্ত ভবনের কাজ সম্পন্ন হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরওআর নকশা অনুয়ায়ী, ভবনের কিছু অংশ খালের মধ্য পড়েছে। তবে বিআরএস নকশা যাচাই করলে দেখা যায়, ভবন মালিকদের জমিতেই ভবন নির্মাণ হচ্ছে। তাই কাজ করার জন্য মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী বলেন, আমি অল্প কিছুদিন হলো এ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এসআই