ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দলিল জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার ১

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
দলিল জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার ১ গ্রেফতার আব্দুল মুনিম।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ভাগ্নি জামাতা কর্তৃক জাল দলিলে নামজারী করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর দুই কোটি টাকা মূল্যের ভূমি আত্মসাতের চেষ্টায় আব্দুল মুনিম (৫৬) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা ভূমি অফিসে এক শুনানিতে নিজের কৃতকর্ম স্বীকার করেন মুনিম।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই প্রবাসীর দলিল ও নামজারী যাচাই করে জালিয়াতির বিষয়টি টের পেয়ে আব্দুল মুনিমকে (৫৬) আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, মুনিম যুক্তরাজ্য প্রবাসী আহমদুর রহমানের স্ত্রী ছালেমা খাতুনের বড়বোনের মেয়ের জামাতা। এ ঘটনায় আব্দুল মুনিম ও তাঁর আরেক সহযোগী নজির হোসেন সুরমানকে অভিযুক্ত করে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তাকিন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া শহরের স্টেশন চৌমুহনীতে পূর্ব মনসুর মৌজায় ১১৭৯ নম্বর খতিয়ানের ২০৬৮ নম্বর দাগে মৌলভীবাজারের বাসিন্দা, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আহমদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী ছালেমা খাতুনের নামে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য দুই কোটি টাকা। সেই ভূমির তত্ত্বাবধায়ক জয়চন্ডী ইউনিয়নের কামারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মৃত মবশ্বির আলীর ছেলে ও হিসেবে প্রবাসীর ভাগ্নি জামাতা মুনিম প্রতারণা করে জাল দলিল তৈরি করে নিজের নামে নামজারী রেকর্ডভুক্ত করেন।

এদিকে ওই ৬ শতাংশ জমি থেকে ৩ শতাংশ কেনেন পৌর শহরের উত্তরবাজারের বাসিন্দা মৃত মো. আব্দুস ছাত্তারের ছেলে জুবায়ের আহমদ সোহেল। তিনি জমিটি নামজারী করার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করতে গেলে জানতে পারেন সেই জমি আব্দুল মুনিমের নামে নামজারি করা হয়েছে। তখন তিনি জাল দলিল ও ভুয়া নামজারীর বিরুদ্ধে উপজেলা ভূমি অফিসে একটি মিসকেইস আবেদন করেন।

পরে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে আব্দুল মুনিমের নামে ৩২৫২/১৯৯০ ও ৫৯২২/২০০২  রেজিস্ট্রি দলিল জেলা রেকর্ড রুম থেকে যাচাই করা হয়। যাচাইয়ে দেখা যায় দলিল দুটি ভিন্ন মৌজা ও ভিন্ন এলাকার। আব্দুল মুনিমের নামীয় দলিলের সঙ্গে রেকর্ড রুমের ভলিউমে লিপিবদ্ধ দলিলের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তখনই জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা ভূমি অফিসে এক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা জাল দলিলের বিষয়ে মুনিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাঁর অপরাধ স্বীকার করেন। এ সময় মুনিম জানান তাঁর এই কাজের সঙ্গে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামের বাসিন্দা নজির হোসেন সুরমান জড়িত। তাঁর সহযোগিতায় তিনি জাল দলিল তৈরি করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা বলেন, মুনিম প্রতারণা করে একজনের ভূমি তাঁর নামে রেকর্ড করে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমার কার্যালয়ে শুনানি করি। শুনানিতে সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। তাকে আটক করে কুলাউড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে দুজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেছেন। আটক আব্দুল মুনিমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। তাঁর সহযোগী নজির হোসেনকে আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
বিবিবি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।