ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ৭০ বছর পর হারানো ছেলেকে ফিরে পাওয়া শতবর্ষী মঙ্গলের নেছার আর নেই।
১০ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়ার ৭০ বছর পর গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ফিরে এসে শতবর্ষী মায়ের সঙ্গে দেখা করেন আবদুল কুদ্দুস মুন্সী।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আশ্রাববাদ গ্রামে ছোট মেয়ে ঝরনা বেগমের বাড়িতে মঙ্গলের নেছা ১১০
বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বিকেলে আশ্রাববাদ গ্রামে তার জানাজা ও দাফন করা হয়। একমাত্র ছেলে আবদুল কুদ্দুস বর্তমানে স্ত্রী–সন্তান নিয়ে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাড়ুইপাড়া গ্রামে থাকেন। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছেন তিনি।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সিংড়া বাজারের ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের উদ্যোগে ৭০ বছর পর মা-ছেলের দেখা হয়। তারা দু’জনই মোবাইল ফোনে আবদুল কুদ্দুসের মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, বেলা ৩টায় আশ্রাববাদ গ্রামে আবদুল কুদ্দুসের মায়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং ওই গ্রামেই তাকে দাফন করা হবে।
আবদুল কুদ্দুসের ছোট ছেলে সোহেল বলেন, বাবা দাদির মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছেন। এর পর থেকেই তিনি তার মায়ের জন্য কান্না করছেন। আমরা সবাই দাদির জন্য দোয়া করছি।
তিনি আরও বলেন, দাদির সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন বাবা। দাদিকে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দাদি অসুস্থ
ছিলেন। চলাফেরা করতে পারতেন না।
আবদুল কুদ্দুস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের মৃত কালু মুন্সীর ছেলে।
বয়স যখন ছয়-সাত বছর, তখন তার বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর মা ছেলেকে লেখাপড়ার জন্য ফুফা পুলিশের দারোগা আবদুল আওয়ালের কাছে রাজশাহীর বাগমারায় পাঠান। সেখানে ফুফুর বকা খেয়ে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন আবদুল কুদ্দুস। ১০ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া
সেই ছেলের বয়স এখন ৮০ বছর। ৭০ বছর পর মা, বোন ও আত্মীয়স্বজনকে ফিরে পেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি সন্তানদের নিয়ে শতবর্ষী মাকে দেখতে আশ্রাববাদ গ্রামে বোন ঝরনা বেগমের বাড়িতে যান।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এসআই