পাবনা: ভাতিজির নিয়োগ বোর্ডে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রিজেন্ট বোর্ডসভা স্থগিত করে দিয়েছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী।
সভা বাতিল হওয়ায় নিয়োগ, পদোন্নতি ও উচ্চশিক্ষার অনুমোদনও অনিশ্চিত হয়ে যায় শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় পূর্ব নির্ধারিত সময় ও তারিখ অনুসারে (রিজেন্ট বোর্ডের) সভার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, এ সভায় একচ্যুয়ালি ও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন বোর্ড সদস্যরা। সভাতে সভাপতিত্ব করেন ভিসি (উপাচার্য)। এসময় বোর্ড সদস্যের মধ্যে ছয়জন একচ্যুয়ালি ও নয়জন ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন বলে জানা গেছে।
সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সম্প্রতি প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও শিক্ষকদের পদোন্নতি, আপগ্রেডেশন ও ডিগ্রি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। কিন্তু সভায় উপস্থিত বোর্ড সদস্য এমপি অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু সম্প্রতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ভিসি স্যারের ভাতিজির নিয়োগ বোর্ডে ভিসি উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এসময় তিনি তার ভাতিজির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রিজেন্ট বোর্ডের সভা স্থগিত করে দেন ভিসি। এসময় বোর্ড সদস্যরা সভাকক্ষ ত্যাগ করে চলে যান। এ রিজেন্ট বোর্ডের সভা স্থগিত হওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে পদবঞ্চিত শিক্ষকরা ভিসির অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়ে কক্ষের সামনে অবস্থান নেন।
শিক্ষকদের মাধ্যমে জানা যায়, ভিসি তার মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে প্রায় শাতাধিক জনবল অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার বিষয়ে শিক্ষকদের পক্ষে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাবেক রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, উপাচার্য স্যার এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে অকার্যকর হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে আমরা নানাভাবে এ অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। ভিসি স্যার তার পছন্দমত মানুষদের দিয়ে নিজের ইচ্ছামত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। তিনি বিদায় বেলায় অনৈতিকভাবে আত্মীয়করণসহ অযোগ্য কর্মীবল নিয়োগ দিতে চাইছেন। শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান পদোন্নতি, ডিগ্রি ও বিদেশ যাওয়া আটকে রেখেছেন। তিনি শেষ বেলায় এ প্রতিষ্ঠানে অবৈধ গণনিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করতে চাইছেন।
সব অবৈধ নিয়োগ বন্ধসহ নিয়ম অনুসারে আটকে থাকা সবার পদোন্নতির দাবি জানান তিনি।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবার জরুরি বৈঠকে বসেন ভিসি ও রিজেন্ট বোর্ড সদস্য অ্যাডভোকেট শাসসুর হক টুকু। বৈঠক শেষে যৌথভাবে আন্দোলনকারীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি জরুরি ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন। পরে আন্দোলনকারীরা ভিসির অফিস কক্ষের তালা খুলে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এসআই