ঢাকা: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যার ১০ বছর হতে চলেছে, তাদের একমাত্র সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘ। ১০ বছর আগের সেই ছোট্ট মেঘ এখন কিশোর।
মেঘ সম্প্রতি সিরাজগঞ্জে বিসিবির ইয়ুথ টাইগার্স অনুর্ধ্ব-১৬ জোনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে পঞ্চগড় জেলা দলের হয়ে খেলেছে। লক্ষ্য তার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলা। সে লক্ষ্যেই ক্রিকেটকে ধ্যান-জ্ঞান করে নিয়েছে মেঘ।
মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর বয়সে মেঘ তার মা-বাবাকে হারিয়েছে। এরপর কিছুদিন আগে মারা গেছেন তার নানীও। বর্তমানে সে আছে মামা নওশের রোমানের কাছে।
মেঘের মামা জানান, কোথাও আমরা মেঘকে একা যেতে দেই না। সর্বশেষ বুধবার সিরাজগঞ্জে ইয়ুথ টাইগার্স টুর্নামেন্ট-১৬-এ ম্যাচ খেলেছে, আমি ওর সঙ্গেই ছিলাম। ও যখন বাসার পাশেই ইন্দিরা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতেও প্র্যাকটিস করতে যায়, তখনও আমরা কেউ না কেউ ওর সঙ্গে থাকি। ওর ইচ্ছাটাকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করি। যাতে বাবা-মায়ের অভাবটা ওর মধ্যে কাজ না করে।
আর ক্রিকেট নিয়ে গুলশানের একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড ৯-এ পড়া মেঘ বলে, আমার নানি ছিলেন ক্রিকেটর খুবই ভক্ত। ইন্ডিয়ার আইপিএলের নিলামের সময় নানি স্বপ্ন দেখতেন আমিও একদিন অত টাকার নিলামে খেলব। মূলত নানির উৎসাহেই আমি ক্রিকেটকে ভালোবেসেছি। এখন আমার মূল লক্ষ্য জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলা। যেভাবে চলছে, আমি আশা করি অনুর্ধ্ব-১৯ দলে খেলতে পারব। অনুর্ধ্ব-১৪ দলে প্রায় চান্স পেয়েই গিয়েছিলাম। চার ধাপে সেখানে পরীক্ষা দিতে হয়। চতুর্থ ধাপের শেষ মুহূর্তে আমি বাদ পড়েছি। আসলে অনেক বেশি নার্ভাস থাকার কারণে ভালো করতে পারিনি। প্রথম ম্যাচটা খারাপ করলেও পরের দু'টি ম্যাচ ভালো করেছি।
ক্রিকেটে মেঘ অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পেস বোলিং করে। তবে বোলিংটা একটু বেশি পছন্দ তার। মেঘেরর মতে, আমি যদি টানা এক বছর অনুশীলন করতে পারি তাহলে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলে তো খেলতে পারবোই। তারপর জাতীয় দলেও খেলতে পরাবো ইনশাল্লাহ।
পড়াশোনার বাইরে আপাতত যে সময়টা মেঘ পায়, তার পুরোটাই ক্রিকেট নিয়ে ভাবে। ফিটনেস নিয়ে থাকে। করোনার মধ্যে যখন কেউ ঘর থেকে বের হতে পারে না, তখনও বাড়িতেই নিয়মিত ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করেছে সে। আর এভাবেই বড় হচ্ছে বাবা-মা হারানো সবার প্রিয় ছোট্ট মেঘ।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এইচএমএস/এসআইএস