মাদারীপুর: মাঝ বয়সী আশ্রাফ আলী। ফরিদপুরের ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে শিমুলিয়া থেকে লঞ্চে উঠেছেন তিনি।
তার কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরেক যাত্রী বলেন, দেখতে দেখতে হয়ে গেলো পদ্মাসেতু। আর মাত্র তিন-চার মাস বাকি। চোখের পলকে চলে যাবে এ কয় মাস! বাড়ি থেকে গাড়িতে উঠে এক্কেবারে ঢাকায় গিয়ে নামা যাবে। পথে পথে ভোগান্তি হবে না।
ঢাকা থেকে চিকিৎসা করিয়ে আসা জাহানারা বেগম বলেন,পদ্মাসেতু চালু হলে দিনে গিয়ে দিনেই বাড়ি ফেরা যাবে। লঞ্চে বসে থাকতে হবে না।
সরেজমিনে শুক্রবার শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের তুলনায় সকাল থেকেই নৌরুটে যাত্রীদের ভিড় কিছুটা বেশি। যাত্রীদের বেশির ভাগই লঞ্চে পার হয়ে আসছেন। এছাড়া স্পিডবোট ঘাটেও কিছুটা ভিড় দেখা গেছে। অন্যদিকে ফেরিঘাটে সীমিত সংখ্যক ফেরি চলাচল করায় যানবাহনের চাপ রয়েছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত নৌরুটে ফেরি চলাচল করে। এরপর বিকল্প রুট হিসেবে মাঝিকান্দি-শিমুলিয়া রুটে বাংলাবাজার ঘাটের আটকে থাকা যানবাহনসহ অন্যান্য যানবাহন পারাপার হয়।
লঞ্চ শ্রমিকেরা জানান,যদিও লঞ্চের চাকরি আর থাকবে না, তারপরও সেতু চালু হলে আমাদেরই বড় উপকার হবে। এই পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। ছেলেমেয়েরা সহজেই রাজধানীতে গিয়ে পড়তে পারবে। রোগী নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করতে হবে না।
এদিকে ফেরিঘাটে অপেক্ষায় থাকা প্রাইভেটকার চালকেরা বলেন,ভাই, পদ্মাসেতু চালু হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে আমাদের। এখন শুধু জুন মাস আসার অপেক্ষায় দিন যাচ্ছে!
বিআইডব্লিউটিয়ের বাংলাবাজার ঘাট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ৮৭ টি ছোট-বড় লঞ্চ চলাচল করছে। এছাড়া বৈধ স্পিডবোট রয়েছে দেড়শ’র মতো। ধারণ ক্ষমতা মেনে নৌযানগুলো যাত্রী পারাপার করছে।
বিআইডব্লিউটিয়ের বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম রুট এই বাংলাবাজার-শিমুলিয়া। পদ্মাসেতু চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটবে। এই রুটে ৮৭ টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করছে। খুব কাছ থেকে পদ্মাসেতু দেখতে যাত্রীরা লঞ্চেই বেশির ভাগ পার হয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এসআইএস