ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করলেন সাবেক ছাত্র নেতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করলেন সাবেক ছাত্র নেতারা

রাজশাহী: নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে রাজশাহীতে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ৩৯তম স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পুষ্পার্ঘ অর্পণ, আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

রাজশাহীর সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে সকাল থেকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচির শুরুতে শহীদ জাফর, জয়নাল, দীপালি সাহা, কাঞ্চন ও মোজাম্মেল আইয়ুবসহ সেদিনের সব শহীদদের প্রতি পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। পরে রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান মুন্নার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ, শহীদ জয়নালের অনুজ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক প্রো-ভিপি হাবিবুর রহমান বাবু, সাবেক ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতা কামরান হাফিজ, রাজশাহী পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস মেরাজুল আলম, সাবেক ছাত্রনেতা জোবায়ের হাসান রুবন, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক মহানগর সাধারণ সম্পাদক তামিম শিরাজী, ছাত্রমৈত্রীর নেতা ইখতিয়ার প্রামাণিকসহ আরও অনেকে।  

সভায় রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান মুন্না বলেন, এই দিনটি আসলে আমাদের শিক্ষার অধিকার আদায়ের দিন, ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিন। অথচ যাদের ত্যাগে আমরা এই দিনটি পেয়েছি, তাদেরই ভুলতে বসেছি। আমরা এই দিনটিতে ভালোবাসার নামে অপসংস্কৃতি চর্চায় মেতে উঠেছি। এছাড়া মিডিয়াগুলোও এই অপসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে, ভুলতে চলেছে এই ঐতিহ্যবাহী দিনটিকে। এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানের জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে।

ছাত্রনেতা তামিম শিরাজী বলেন, প্রজন্ম ভুলে গেছে ৮৩-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার লাল গোলাপ নয়, সেদিন ঝরেছিল ছাত্রদের বুকের রক্তে রঞ্জিত রাজপথের রক্তাত্ব গোলাপ। করপোরেট সংস্কৃতির প্রবল জোয়ারে সুপরিকল্পিতভাবে তরুণদের তাদের গৌরবের ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভালোবাসা দিবসের নামে চলছে অপসংস্কৃতি। স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা আজ প্রায় হারিয়ে গেছে বলা যায়। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাত্রনেতারা এবং রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রযন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েও স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা এই প্রজন্মদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যার্থ হয়েছে।

এরপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন শহীদ জয়নালের অনুজ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, শহীদ পরিবারের সদস্য ও সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।  

১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ‘মজিদ খানের শিক্ষানীতি প্রত্যাহার, বন্দি মুক্তি ও জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার’ দাবিতে সারা দেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই দিন পুলিশের গুলিতে জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, দিপালীসহ সারা দেশে ১১ জন ছাত্র প্রাণ হারান। এরপর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
এসএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।