নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অটোরিকশা চুরি করে পালানোর সময় জিয়া উদ্দিন পারভেজ (২৩) নামে এক পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল) আটক করেছে স্থানীয়রা। এরপর মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় তাকে।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত জিয়া নোয়াখালী পুলিশ লাইন্সে কর্মরত। তার ব্যাচ নং-৭৪৩। তিনি চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার কচুয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ১০ দিনের নৈমিত্তিক ছুটিতে থাকা অবস্থায় রোববার রাত ৯টার দিকে জিয়া পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজার থেকে একটি অটোরিকশা ভাড়া নেয়। একপর্যায়ে ওই অটোরিকশা যোগে পার্শ্ববর্তী চরফকিরা ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় গিয়ে চালকের চোখে মুখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে রিকশা ছিনিয়ে নেয়।
পরে রিকশা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ওই সময় অটোচালকের চিৎকারে স্থানীয়রা এসে জিয়াকে হাতেনাতে আটক করে এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি মরিচের গুঁড়ার পলিথিন উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থলের পাশে থাকা সেনাবাহিনী ক্যাম্পের একাধিক সদস্য সেখানে আসেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য শুনে পুলিশে খবর দেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে পুলিশের একসেট ইউনিফর্ম পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে স্থানীয় লোকজন আটক ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই সময় ওসি স্থানীয়দের রোষানলে পড়েন। একই সঙ্গে উত্তোজিত জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকেন।
ইতোমধ্যে এ ঘটনার একটি লাইভ ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়- ওসি মো. সাজ্জাদ রোমন ভুক্তভোগী অটোচালককে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভিডিওতে ওসিকে আরও বলতে শোনা যায়, অন্য লোকের জন্য যে ব্যবস্থা তার (পুলিশ সদস্য জিয়া) জন্যও একই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাজ্জাদ রোমনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এরপর অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওসির হোয়াটস অ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জানুয়ারি দুপুর ২টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চৌকিদার বাড়ি সংলগ্ন মহিষের ডগি থেকে অটোচালক বলরামের (১৫) হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এ ঘটনায় উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
জেডএ