সুনামগঞ্জ: বসন্তের ফাগুনের রাঙা রঙে প্রকৃতি তার মনের মাধুরী মিশিয়ে শিমুল ফুলের লাল রঙে আপন মহিমায় সেজেছে শিমুল বাগান। মাঘের শেষ দিকে ও ফাল্গুনের শুরুর দিকে ফুটতে থাকে শিমুল ফুল।
যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই লাল শিমুল ফুল। দেশের সবচেয়ে বড় এই শিমুল বাগান ইতি মধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশি পর্যটকদেরও নজর কেড়েছে। বিশেষ করে বাঙালি প্রবাসীরা এই শিমুল বাগানের চিত্র দেখে মুগ্ধ হয়ে দেশে আসলেই ঘুরতে যাচ্ছেন শিমুল বাগানে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানি গাঁও এ ২০০০ সালে ১০০ বিঘা জমির মধ্যে ৩ হাজার শিমুল গাছ লাগিয়ে এ বাগানটি গড়ে তুলেন বাধাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। বর্তমানে তার ছেলে-মেয়েরা এই বাগানটির দেখাশুনা করছেন।
দেশি বিদেশি পর্যটক মিলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার লোকের সমাগম হয় বাগানে। জন প্রতি ২০ টাকা করে টিকেট কেটে বাগানে প্রবেশ করতে হয়। দলে দলে পর্যটকরা আসছেন বসন্তের শিমুল রঙে মনকে রাঙিয়ে নিতে। কেউ আসছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেউবা আসছেন বন্ধু বান্ধব বা প্রিয় মানুষকে নিয়ে।
শিমুল বাগানে কিছু বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। ঘোড়ায় চড়ে বাগান দেখার সুযোগসহ নাগর দোলনার ব্যবস্থা আছে। প্রিয় সময়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ফ্রেইম বন্দি করতে শিমুল ফুল দিয়ে তৈরি লাভের (ভালবাসার প্রতীক) ভিতরে ছবি বসে প্রিয়জনকে নিয়ে ছবি তুলছেন। মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। পাখির কলতানে যেন এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য বিরাজ করছে শিমুল বাগানে।
বিশেষ করে ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উদযাপনের জন্য দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। শিমুল বাগানে এসে ভারত থেকে নেমে আসা যাদুকাটার নদীর সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারছেন পর্যটকরা।
তবে বাগানে খাওয়া দাওয়া অবকাঠামো গত সুযোগ সুবিধা না থাকায় দর্শনার্থীরা পড়ছেন বিপাকে।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক সাদিয়া রহমান লিরা বলেন, বসন্তের শুরুতে শিমুল বাগানে আসতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। এর আগে আমি শিমুল ফুল দেখিনি। সিলেটে অনেক দিন ধরে থাকা হলেও এ বাগানে আসা হয়নি। বাগানে আসার জন্য রাস্তায় একটু দুর্ভোগ পোহাতে হলেও শিমুল বাগানে প্রবেশের পর সেগুলো ভুলে গেছি।
বিআরটিএর কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম রাসেল বলেন, অনেক দিন হলো কোভিডের কারণে কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান দেখতে আসলাম। অনেক ভাল লাগছে। তবে বাগানের পর্যটকদের জন্য আরও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা দরকার।
ব্যাংক কর্মকর্তা হিরক তালুকদার বলেন, সময় ও সুযোগের অভাবে বাগানে আগে আসা হয়নি। তবে এখন পরিবার নিয়ে আসতে পেরে অনেক ভাল লাগছে।
বাগান মালিক রাখাব উদ্দিন বলেন, আমরা পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। খাবারের জন্য ক্যান্টিন আরও উন্নত করা হবে। এছাড়া বাগানের পাশে খুব দ্রুত উন্নত ওয়াশ রুমের ব্যবস্থাও করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
এনএইচআর