রাজশাহী: রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় দুর্ঘটনার কবল থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকাগামী বনলতা এক্সপ্রেসের ৮৫০ জন যাত্রী।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় রেললাইনে ফাটল দেখে গলায় থাকা লাল গামছা তুলে ধরলে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সাহসী দুই কৃষক হলেন- চারঘাটের জিয়াউর রহমান ও হাবলু মিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, সকালে রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে কাজে যাচ্ছিলেন জিয়াউর রহমান ও হাবলু মিয়া। এ সময় লাইনের একটি ভাঙা অংশ তাদের চোখে পড়ে। ঠিক ওই সময়ই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা বনলতা এক্সপ্রেসের আওয়াজ তাদের কানে ভেসে আসে। তখন জিয়াউর ও হাবলু তাৎক্ষণিকভাবে লাইনের মাঝখানে নিজেদের লাল গামছা টাঙিয়ে দেন। এই লাল কাপড়ের গামছা দেখেই ট্রেনটি দূরে থেমে যায়। পরে রেলের প্রকৌশলী ও মিস্ত্রিরা ঘটনাস্থলে এসে রেললাইন মেরামত করলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় ৮৫০ জন যাত্রী নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। রেললাইন ফাটলের খবর পেয়ে মিস্ত্রিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইনের পাশে ফিসপ্লেট লাগিয়ে দিয়েছেন। এদিকে রাজশাহী থেকে ট্রলিতে করে জ্যেষ্ঠ উপ সহকারী প্রকৌশলী তার সহকর্মীদের নিয়েও ঘটনাস্থলে গিয়ে স্লিপার বসানোর কাজ করেন।
তিনি বলেন, গরমের সময়ের চেয়ে শীতকালে লাইন ফাটলের ঘটনা পাঁচ-ছয় গুণ বেশি ঘটে। আবার ফাটল ধরা ওই স্থানে স্টিলের স্লিপার ছিল। ওই স্লিপার চুরি হয়ে যাওয়ায় সেখানে কাঠের স্লিপার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু দুই স্লিপারের মধ্যে ফাঁক বেশি ছিল। এজন্য ট্রেন চলাচলের সময় চাপ লেগে লাইন ফেটে গিয়েছিল।
এর আগে, রাজশাহীর আড়ানীতে রেললাইন ভাঙার কারণে অস্থায়ী গেটম্যানের লাল কাপড়ের সংকেতে রক্ষা পান ট্রেনের হাজারো যাত্রী। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর আড়ানী স্টেশন এলাকার বড়াল নদীর ব্রিজের পশ্চিম দিকে রেললাইন ভেঙে যায়। এর ফলে তাৎক্ষণিক রাজশাহীগামী আন্তঃনগর ট্রেন উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটিসহ সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেললাইন মেরামতের পর দুপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২
এসএস/এএটি