ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ময়মনসিংহে ডোপ টেস্ট বাণিজ্য, নাখোশ সেবা প্রার্থীরা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
ময়মনসিংহে ডোপ টেস্ট বাণিজ্য, নাখোশ সেবা প্রার্থীরা!

ময়মনসিংহ: সরকারি চাকরিতে যোগদান, মোটরযান চালকদের নতুন লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মাদক মুক্ত সনদ দাখিল করতে হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।

যা সেবা প্রার্থীদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এ ডোপ টেস্ট সনদটি নিয়ে ময়মনসিংহে কমিশন বাণিজ্য শুরু হয়েছে। এ নিয়ে নাখোশ সেবা প্রার্থীরা।

জানা যায়, সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হলেও উল্টো চিত্র ময়মনসিংহে। দেশ সেরা চিকিৎসা সেবায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাম থাকলেও এখানে নেই ডোপ টেস্ট সুবিধা। এ অবস্থায় সেবা প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট সুবিধা উন্মুক্ত না করে নগরীর বিশেষ ৪টি ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ময়মনসিংহ সার্কেলের কর্মকর্তারা।

ফলে ওই নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলোতে ডোপ টেস্টের জন্য গেলে খরচ দিতে হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। যা সরকারি হাসপাতালে খরচের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি।

অভিযোগ উঠেছে, ওই হাসপাতালগুলোতে করা প্রতিটি রিপোর্টের কমিশন যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তাদের পকেটে। আর এ কারণেই নির্দিষ্ট এ হাসপাতালগুলোতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ বিআরটিএ'র অফিসের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি ডোপ টেস্ট স্লিপে এর প্রমাণ মিলেছে। ওই স্লিপে উল্লেখিত নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলো হল- প্রান্ত স্পেশালাইজড হসপিটাল, পপুলার মেডিক্যাল সেন্টার, মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ইউনিয়ন স্পেশালাইজড হসপিটাল।

নগরীর চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী রাফসান জানান, নতুন লাইসেন্স করতে গিয়ে ডোপ টেস্টে অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছি। সরকারি হাসপাতালে এ টেস্ট করতে ৯০০ টাকা খরচ হলেও নির্দিষ্ট হাসপাতালে তিন গুণ টাকা দিতে হয়েছে।

একই ধরনের অভিযোগ করেছেন লাইসেন্সধারী পেশাদার চালক শামীম আহম্মেদসহ আরো অনেকেই।

জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বিআরটিএ'র সহকারী পরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সিভিল সার্জনের অফিস থেকেই এই প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর নাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে আমার কিছু করার নেই।

ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহে সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্টের সুবিধা নেই। তবে সেবাটি চালু করার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ সময় নগরীর বিশেষ ৪টি ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগদানকারীদের জন্য আগে থেকেই এই হাসপাতালগুলো নির্ধারণ করা ছিল। সম্প্রতি বিআরটিএ থেকে এ বিষয়ে আমার কাছে মতামত চাইলে আমি ওই হাসপাতালগুলোর কথা বলেছি। এতে বাণিজ্য করার কিছু নেই।

এদিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডোপ টেস্ট চালু প্রসঙ্গে পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. ফজলুল করিম বলেন, মাসখানেক আগে ডোপ টেস্ট চালু প্রসঙ্গে একটি চিঠি পেয়েছি। সে মোতাবেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে এ সংক্রান্ত সহযোগিতা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ডোপ টেস্ট চালুর বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।