ঢাকা: চলমান উত্তেজনার মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নানা জটিলতায় তারা এখনই ইউক্রেন ছাড়তে পারছেন না।
প্রবাসীরা বলছেন, ইউক্রেন থেকে বিমান যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। আর দেশে ফেরার পর আবার ইউক্রেনে ফিরতে যাতায়াতে অনেক টাকা ব্যয় হবে। এই ব্যয় বহন করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে পোল্যান্ড সংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড শীত, সহজেই সেখানে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
প্রবাসীদের পরিস্থিতি জানতে চাইলে কিয়েভের ইন্টারন্যাশনাল ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ফাত্তাহ খান বাংলানিউজকে বলেন, পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে আমার জানামতে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি এখনো ইউক্রেন ত্যাগ করেননি। ইতোমধ্যে বিমান যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। আবার দেশে গিয়ে ফিরতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। করোনা মহামারিকালে বিমান ভাড়া অনেক বেড়েছে।
ফাত্তাহ খান জানান, ইউক্রেনে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় সৃষ্টি হয়েছে অনেক সমস্যার। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস এখানকার প্রবাসীদের তালিকা তৈরি করেছে। তবে আমাদের ক্ষেত্রে কোনো তালিকা করা হয়নি। এখানে আমরা কোনো সমস্যায় নেই। আমাদের ইউক্রেনের বন্ধুরা কোনো সমস্যা হবে না বলে আশস্ত করেছেন।
ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ার পর বেশ কয়েকটি দেশ নিজেদের কূটনীতিক ও নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, ইসরায়েল, নেদারল্যান্ডস, জাপানসহ প্রায় ২০টি দেশ।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবিলম্বে ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় অন্য কোনো দেশে যেতে না পারলে তাদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে বলা হয়। একইসঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জরুরি না হলে ইউক্রেনে সব ধরনের ভ্রমণ পরিহারের জন্য বলা হয়।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস এক জরুরি বার্তায় ইউক্রেনের প্রবাসী বাংলাদেশিদের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পরামর্শ দিয়েছিল। নিরাপদ স্থান হিসেবে ইউক্রেনের বাইরে কোনো নিরপেক্ষ দেশ অথবা ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে পোল্যান্ড সংলগ্ন সীমান্ত এলাকার কথা উল্লেখ করে দূতাবাস।
পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ইউক্রেনের প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। ইউক্রেনে প্রবাসীদের সহায়তার জন্য দূতাবাসে একটি সেল খোলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ঠিক কতজন বাংলাদেশি আছেন, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে একটি সূত্র জানায়, বৈধ-অবৈধ সব মিলিয়ে সেখানে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি থাকতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
টিআর/এনএসআর