ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে সচেতনতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে সচেতনতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

চুয়াডাঙ্গা: হাতে মাইক, কাঁধে ব্যাগ। সরু রেলপথ ধরে হাঁটছেন কয়েকজন যুবক।

জনতার জটলা দেখলেই থমকে দাঁড়াচ্ছেন তারা। মানুষের হাতে লিফলেট ধরিয়ে মাইকে শোনাচ্ছেন সচেতনতার বাণী। ট্রেন ভ্রমণ নিরাপদ ও পাথর নিক্ষেপ বন্ধে পায়ে হেঁটে মানুষকে সচেতন করছে চুয়াডাঙ্গার এক স্কুল শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী।  

গেল দুদিনে জেলার প্রায় ৫০ কিলোমিটার রেলপথে মাইকিং, লিফলেট, পোস্টারিং ও ব্যানার নিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন তারা। তাদের এমন কার্যক্রমে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও।

রেলপথে পাথর নিক্ষেপে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সারাদেশে অন্তত ২০টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার নামও। আলমডাঙ্গা থেকে জীবননগরের উথলী পর্যন্ত রেলপথ ৪৭ কিলোমিটার। পুরোটা পথ হেঁটে কার্যক্রম চালায় আয়োজকরা। ব্যতিক্রমী এই পদযাত্রার উদ্যোক্তা একজন স্কুল শিক্ষক। সঙ্গে থাকা বাকিরা শিক্ষার্থী।  
গত মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে চলে এই কার্যক্রম। রেললাইনের সরু পথে হেঁটে হেঁটে কখনও মাইকিং করছেন তারা, কখনও লিফলেট বিতরণ, আবার কখনো স্টেশনের দেওয়ালে সাঁটানো হচ্ছে পোস্টার। আবার মানুষের ভিড়ে ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে পথসভা করছেন। এভাবেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধের আহ্বান জানানো হয় এই পদযাত্রা থেকে।

এ কার্যক্রমের মূল উদ্যোক্তা চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর বেলগাছি গ্রামের বখতিয়ার হামিদ বিপুল। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। ব্যতিক্রমী এ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে বিপুল বলেন, দেশের সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ। কিন্তু কিছু সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে সে ভ্রমণ অনিরাপদ ও শঙ্কায় পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনে পাথর ছোড়ার কারণে অনেক যাত্রী আহত ও  রক্তাক্ত জখম হয়। এসব চিন্তা করেই মানুষকে সচেতন করতে বেরিয়ে পড়া। দুইদিনে ভাগ করে চুয়াডাঙ্গা থেকে উথলী এবং আলমডাঙ্গা থেকে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত মোট ৪৭.২ কিলোমিটার রেলপথ পায়ে হেঁটে হেঁটে এ কার্যক্রম চালানো হয়। এতে বেশ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমরা হাতে গোনা কয়েকজন পায়ে হেঁটে এ যাত্রায় অংশ নিয়েছি। শুধু আমরা সচেতন হলেই হবে না। সমাজের সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। তবেই এমন অপরাধ কমানো সম্ভব। এজন্য জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকেও কাজ করা উচিত। তাদের এমন কার্যক্রমকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সাধারণ মানুষ।  

চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুর রেলস্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, পাথর ছোড়ার কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আহত হয় অনেকে। যারা ট্রেন ভ্রমণ করেন তাদের মধ্যেও এলাকা ও রেল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এজন্য রেলযাত্রা নিরাপদ করতে এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এমন ভিন্ন কার্যক্রম সচেতনতা বৃদ্ধির অন্যতম উপায়।

রেলযাত্রা নিরাপদের পাশাপাশি, বন্যপ্রাণি সংরক্ষণেও মানুষকে সচেতন করা হয় এই পদযাত্রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।