ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অযত্নে পড়ে আছে ইয়াছিন কলেজের প্রথম শহীদ মিনার

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
অযত্নে পড়ে আছে ইয়াছিন কলেজের প্রথম শহীদ মিনার

ফরিদপুর: যে মিনার মনে করিয়ে দেয় ভাষার কথা। ভাষার জন্য জীবন দেওয়ার কথা।

মনে করিয়ে দেয় ভাষা আন্দোলনের এক গৌরবময় ইতিহাসের কথা। সে শহীদ মিনার পড়ে আছে জঙ্গলে, অযত্ন আর অবহেলায়।

এই শহীদ মিনারটি ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজের। মিনারটি কলেজ ক্যাম্পাসের পশ্চিম দিকের এক কোণে পড়ায় সেটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশে নারীদের কমনরুমের সঙ্গেই নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তাই পুরাতন শহীদ মিনারটির দিকে নজর নেই কলেজ কর্তৃপক্ষের।

শুধু তাই নয়, মিনারটির পাশে বাউন্ডারি সংলগ্ন প্রধান সড়কে রয়েছে একটি খাবার হোটেল। তার যত ময়লা আবর্জনা হয়, সবই ফেলা হয় এখানে। যে মিনারের পাদদেশে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হতো সেখানে আজ ময়লা আবর্জনা জমে থাকে।

ফরিদপুর শহরের টেপাখোলায় অবস্থিত সরকারি ইয়াছিন কলেজ। এটি প্রথম প্রতিষ্ঠা হয় ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল নামে। সে সময়ে শিক্ষানুরাগী ইয়াছিন জমা‍দার জমি ও অর্থ সাহায্যে করে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষা বিস্তারে ওই সময় খুব স্বল্প সংখ্যক মুসলমানই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে এগিয়ে আসতেন। তাই ইয়াছিন জমাদারের মতো স্বল্প শিক্ষিত মানুষের পক্ষে এ ধরণের প্রয়াস ছিল অকল্পনীয়।

ইয়াছিন মুসলিম হাই স্কুল ১৯৬৮ সালে স্থানীয় মানুষ এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্যোগে ইয়াছিন কলেজে রূপান্তরিত হয়। যা ১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজকের সরকারি ইয়াছিন কলেজ নামে পরিচিতি লাভ করে। কলেজে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষক রয়েছেন ৪০ জন। শিক্ষার্থীদের এইচএসসি এবং অনার্সের ৪ট বিষয়ে পাঠদান দেওয়া হয় এখানে।

১৯৯৯ সালে কলেজে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। ২০১২ সালে কলেজের অফিস কক্ষের পাশে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে আগেরটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অবহেলায় পড়ে আছে প্রথম নির্মিত শহীদ মিনারটি।

এ কলেজের দারোয়ান মজিদ শেখ। প্রায় ৩০ বছর ধরে চাকরি করেন এখানে। তিনি বলেন, কলেজের গেটের সামনেই শহরের বৃহত্তম গরুর হাট। প্রতি মঙ্গলবারে এখানে হাট বসে। হাটের অনেক গরু ব্যবসায়ীরা ভেতরে ঢুকে ওই জঙ্গলে শহীদ মিনারে পায়খানা প্রসাব করে। নতুন গেটের নির্মাণ কাজ হচ্ছে তাই প্রবেশ পথ খোলা।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শীলা রানী মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পুরাতন শহীদ মিনারটি আগের মডেলের। পুরাতন মিনারটির সামনে তিন তলা ভবন থাকায় তা ক্যাম্পাসের এক কোণে পড়ে গেছে। তাছাড়া সেখানে নতুন ৬ তলা ভবন পাশ হয়ে গেছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে। বিভিন্ন কারণে আগেরটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে আধুনিক শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভাষা দিবসটিকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পনা আছে পুরাতন মিনারটিকে পরিষ্কার করে রং করার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।