ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কলাগাছ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
কলাগাছ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা কলাগাছের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: পুরো গ্রামের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। তবুও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিরত থাকেননি কিশোর ও তরুণরা।

কলাগাছ দিয়ে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন একটি শহীদ মিনার। আর তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারা।   

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রমধর্মী কলাগাছের এ শহীদ মিনারটি তৈরি হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আফজল আদর্শ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। বিদ্যালয়টি চর রমিজ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আদর্শপাড়া গ্রামে অবস্থিত।

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী অস্থায়ী শহীদ মিনারটি তৈরি করে স্থানীয় কয়েকজন কিশোর ও তরুণ। রাত ১২.০১ মিনিটে তারা নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারটিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।  
  
এর উদ্যোক্তা রামগতি আ স ম আবদুর রব কলেজের বিএসএসের ছাত্র মো. শেখ রাসেল, কলেজছাত্র কামরুল হাসান শাকিব, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল ও তামজিদ হোসেন।  

তারা জানান, বিদ্যালয় মাঠে ও আশপাশের ধারে কাছে কোনো শহীদ মিনার নেই। এতে প্রতিবছর মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পারছেন না তারা। এবার চারজন মিলে সাতটি কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনারটি বানিয়েছেন। তিনটি মিনার তৈরি করে সাদা কাপড় জড়িয়ে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়। মাঝখানের মিনারটি দেশের পতাকা জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আয়তকারের মতো চারপাশে সুতার মধ্যে রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে শহীদ মিনার এলাকা। রাতে শহীদ মিনারটি আলোকিত করতে বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।  

আয়োজক শেখ রাসেল বাংলানিউজকে জানান, মেঘনা নদী ভাঙন কবলিত রামগতির অনেক বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তাদের এলাকায় শহীদ মিনার গড়ে উঠেনি। এর আগে তারা রাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি। ভোরে তারা দূরের কোনো শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতো। তবে এবার তারা নিজেরাই কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করেছেন।  

বিদ্যালয় মাঠে যেন প্রশাসনের উদ্যোগে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়, সে দাবি জানিয়েছেন এ কলেজছাত্র।

চররমিজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম দিদার বলেন, আমার ইউনিয়নের তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা কলাগাছ ও কাঠ দিয়ে প্রতিবছর শহীদ মিনার বানিয়ে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়। মাতৃভাষার জন্য শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।  

প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।