জামালপুর: আজ ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। হাতে হাতে বসন্তে ফোটা ফুলের তোড়া নিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর দিন।
কিন্তু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় পা পিছলে কোমরে ব্যথা পান তিনি। এখন ৯৫ বছর বয়সী ওই ভাষাসৈনিক ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ সকালে সবাই ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও, শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন। তাই তিনি হাসপাতালে বেডে শুয়ে ফোনে করেন এমপি মির্জা আজমকে। ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন এমপি মির্জা আজমকে শহীদ মিনারে গিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
সবেমাত্র মির্জা আজম এমপি জামালপুরের সব কর্মযজ্ঞ শেষ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। পথিমধ্যে ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিনের ফোন পেয়েই সঙ্গে সঙ্গেই জামালপুর পৌরমেয়র আলহাজ মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানুকে শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। জামালপুর পৌরমেয়র ‘হ্যালো টিমের’ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিনকে শহীদ মিনারে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে ভাষাশহীদদের স্মরণ করেন কয়েস উদ্দিন। একইসঙ্গে ভাষাশহীদদের স্মরণে তার নিজের লিখা একটি গানের চার লাইন গেয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তাকে পুনরায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পৌঁচ্ছে দেন হ্যালো মেয়র টিমের সদস্যরা।
ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিনের ইচ্ছেপূরণ করায় এমপি মির্জা আজম, পৌরমেয়র আলহাজ ছানোয়ার হোসেন ছানু ও হ্যালো মেয়র টিমের সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার ভাষা আন্দোলনের ওপর গান লিখে নিজেই গেয়ে বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করতেন। শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়-অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গান রচনা করেন। তিনি আইয়ুব খানের মার্শাল ‘ল’র সময় এক বছর জেল খাটেন আইয়ুববিরোধী গান রচনার জন্য। ভাষাসৈনিক কয়েস উদ্দিন সরকার জামালপুর শহরের বেলটিয়া গ্রামের মরহুম ছইম উদ্দিন সরকারের ছেলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
এএটি