চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ‘বাবা এতদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন অনেকটা মানিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু বাবাকে ফেসবুক, টিভিতে দেখার পর কষ্ট বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
এভাবেই বাবার স্মৃতিচারণ ও সৎ মায়ের বক্তব্য খণ্ডন করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই বকুলের বড় ছেলে সিহাব উদ্দীন।
সম্প্রতি বকুলের প্রতিবন্ধী দ্বিতীয় স্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডন করে সিহাব উদ্দীন উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে, তাদের পরিবার কেন একবারের জন্যই আমার দাদা-দাদি ও আত্মীয়-স্বজনের পরিবারের খোঁজ নেয়নি, তাদের কী একবারও মনে হয়নি শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসার কথা। তাহলেও তো তারা বুঝতে পারতেন। ’
তিনি জানান, ‘তার বাবা অষ্টম শ্রেনি পযন্ত পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু তার বক্ত্যব্যে প্রচার হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন, সেটিও মিথ্যা কথা। তার বিচার হওয়া উচিত। ’
এদিকে সিহাবের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার মা বাড়ির রান্না নিয়ে ব্যস্ত। ছোট ভাই বাড়িতেই কৃষি কাজ করছে। আর সিহাব বাড়ির পাশের মোড়ে অপর ছোট ভাই সোহাগকে নিয়ে একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করছেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মায়ের চেষ্টা ও তাদের পরিশ্রমে কোনমতে দিন চলে তাদের।
বাবার প্রসঙ্গে আর কথা বলতে হচ্ছে হয় না ছোট ছেলেদেরও। তবে, ছেলেদের বাবার কাছে কোন চাওয়া-পাওয়া না থাকলেও বাবা যে মিথ্যাবাদী এটা দেশবাসী জানুক এটায় তাদের বর্তমান চাওয়া।
তবে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, বকুলের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য এনামুল হক বলেন, ‘আমরা ছোট থেকেই মোখলেছুর রহমান বকুলকে চিনি। ফেসবুকে বকুলকে চিনতে পেরেছি। আমরা গত ১৫ বছর আগে থেকে জানতাম বকুল পালিয়ে গিয়ে ঢাকায় আছেন। আর এখন এ ঘটনা জানতে পারছি। বকুল অনেক বড় একটা প্রতারক। তার বিচার হওয়া দরকার। ’
আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন মেহেদী বলেন, ‘প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রতারণা করা একটা বড় অপরাধ। যদিও বকুল প্রতিবন্ধী স্ত্রীর সেবা করে ভালো কাজ করেছে, কিন্তু তিনি প্রতারণা ও আইন অমান্য করেছেন। তাই আর কেউ যেন এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিতে না পারে তাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়ায়া উচিত তার। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
এএটি